বিজেপির এই ‘তাণ্ডবের’ প্রতিবাদে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে কংগ্রেসের পাল্টা বিক্ষোভ (বাঁ দিকে)। বিধান ভবনের সামনে বিজেপির বিক্ষোভ। কালি লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে রাহুল গাঁধীর ছবিতে। শনিবার। ছবি: সুমন বল্লভ
কংগ্রেস ও বিজেপির বিক্ষোভে শনিবার দু’দফায় বিশৃঙ্খলা ছড়াল মধ্য কলকাতায়। অল্প সময়ের জন্য হলেও দুই দলের রাজ্য দফতরের সামনে এই বিক্ষোভে চূড়ান্ত হয়রানির মধ্যে পড়েন সাধারণ মানুষ। তবে দু’ক্ষেত্রেই পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ করে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে।
এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ বিজেপির যুব সংগঠনের তরফে বিক্ষোভ দেখানো হয় কংগ্রেস দফতরের সামনে। রামলীলা ময়দান থেকে মিছিল করে শ’খানেক বিজেপি সমর্থক চলে আসেন প্রদেশ কংগ্রেস দফতরের সামনে। তাঁদের দাবি ছিল, রাফাল নিয়ে মন্তব্য প্রত্যাহার করে রাহুল গাঁধীকে ক্ষমা চাইতে হবে। স্লোগান দিতে দিতে অফিসের বন্ধ গেটে দলের পতাকা ঝুলিয়ে দেন বিজেপি সমর্থকেরা। সেই সঙ্গেই অফিসে লাগানো সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধীর ছবিতে কালি ছিটিয়ে সেগুলি ছিঁড়ে দেওয়া হয়। গেট খোলার চেষ্টা করে না-পারায় ভিতরে বৃদ্ধ কেয়ারটেকারের গায়ে কালি ছিটিয়ে দেন তাঁরা। তত ক্ষণে মৌলালিমুখী সিআইটি রোড বন্ধ হয়ে যায়। যানবাহন
আটকে যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশকর্মীরা এগিয়ে গেলে রাস্তায় বসে পড়েন বিজেপি সমর্থকেরা। কর্তব্যরত পুলিশের উর্দিতেও কালি ছিটিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। কিছু ক্ষণ পরে বড় পুলিশ বাহিনী এসে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়। বিজেপি সমর্থকদের এই বিক্ষোভ নিয়ে এন্টালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, ‘‘নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি আমদানি করে চমক দিতে চাইছে।
কিন্তু এখানে চমকে কাজ হবে না।’’ বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘বিরোধী দলের অফিসে শাসকের এই আক্রমণের সংস্কৃতি বিজেপিরই।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ পাল্টা বলেন, ‘‘আমাদের যুব মোর্চার কর্মীরা কংগ্রেস দফতরে বিক্ষোভ দেখিয়ে ঠিক কাজই করেছেন। কেউ অতি উৎসাহে কারও গায়ে কালি ছিটিয়ে থাকতে পারেন। কিন্তু কাউকে অসম্মান করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়।’’
ঘণ্টা দুই পরে কংগ্রেসের যুব সংগঠনের বিক্ষোভে অশান্ত হয়ে ওঠে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ। বিজেপির রাজ্য অফিসে বিক্ষোভ দেখানোর কথা থাকলেও মিছিল করে আসা যুব কংগ্রেস সমর্থকদের মেডিক্যাল কলেজের সামনেই আটকে দেয় পুলিশ। সেখানে বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভাঙতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের বেশ কিছুক্ষণ ধস্তাধস্তি হয়। ফলে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের এই অংশে যান চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রদেশ কংগ্রেসের দাবি, যুব সংগঠনের সাহদাব খান সহ পাঁচ জন জখম হয়েছেন। ৫০ সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে।