অতিরিক্ত অক্সিজেনের সাহায্য ছাড়া এভারেস্ট-লোৎসে জোড়া শৃঙ্গ অভিযান লক্ষ্য ছিল বঙ্গকন্যার। ফাইল ছবি
এভারেস্টের পর লোৎসেতে পা রাখলেন চন্দননগরের মেয়ে পিয়ালি বসাক। পরপর দুটি শৃঙ্গ জয় করে নজির গড়লেন তিনি।
অতিরিক্ত অক্সিজেনের সাহায্য ছাড়া এভারেস্ট-লোৎসে জোড়া শৃঙ্গ অভিযান লক্ষ্য ছিল বঙ্গকন্যার। কিন্তু রবিবার খারাপ আবহাওয়ার জন্য ৮৪৫০ মিটার উচ্চতায় পৌঁছে বকি পথটুকু অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহারে বাধ্য হন বছর একত্রিশের পিয়ালি। পরিকল্পনা ছিল, এভারেস্ট সামিট শেষে ক্যাম্প ৪-এ ফিরে যত দ্রুত সম্ভব লোৎসের দিকে এগোবেন।
সোমবার সকাল ১১ টা নাগাদ ক্যাম্প ফোর থেকে বেরিয়েছিলেন পিয়ালি। এভারেস্ট থেকে নামার পর ‘স্নো ব্লাইন্ডনেস’ হয় তাঁর। এর পরই এজেন্সি মারফত খবর আসে মঙ্গলবার সন্ধ্যার সময় পিয়ালি লোৎসে জয় করেছেন।
পৃথিবীর চতুর্থ উচ্চতম শৃঙ্গ লোৎসের উচ্চতা ৮৫১১ মিটার। সমস্ত প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও একসঙ্গে দু’টি শৃঙ্গ জয় করলেন পিয়ালি।
তিনি এক সঙ্গে দু’টি শৃঙ্গ জয় করার লক্ষ্যেই বেরিয়েছিলেন। দু’দিন আগে তাঁর কাটাপুকুরের বাড়িতে আসে খুশির খবর। মঙ্গলবার বড় মেয়ের স্বপ্নপূরণের খবর পেলেন মা স্বপ্না বসাক।
দেশের প্রথম মহিলা হিসেবে অক্সিজেনের সাহায্য ছাড়া গত অক্টোবরে ধৌলাগিরি শৃঙ্গ জয় করেছিলেন পিয়ালি। তার ঠিক সাত মাসের মধ্যে আবারও অনন্য কৃতিত্বের অধিকারী হলেন তিনি।
দীর্ঘদিন ধরেই এভারেস্টের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পিয়ালি। তবে তাঁর যাত্রার পথে মূল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল অর্থ। বাড়ি বন্ধক রেখে এবং নিজের যাবতীয় সঞ্চয় একত্র করেও ১৮ লাখ টাকার বেশি হচ্ছিল না। এ দিকে, এভারেস্ট অভিযানের জন্য দরকার ছিল ৩৫ লাখ। নেপাল সরকার জানিয়ে দিয়েছিল, পুরো টাকা না পেলে এভারেস্ট অভিযান করতে দেবে না তারা।
এই অবস্থায় ফেসবুকে পোস্ট করে সাধারণ মানুষের কাছে অর্থের আবেদন করেন পিয়ালি। সেখান থেকে আরও পাঁচ লাখের মতো টাকা ওঠে। তখনও দরকার ছিল ১২ লাখ। এমন সময় পিয়ালির সাহায্যে এগিয়ে আসে তাঁর এজেন্সি। তারাই আপাতত বাকি টাকা দিয়ে দেবে বলে জানায়। ফলে শেষ মুহূর্তে এভারেস্টে ওঠার অনুমতি পান পিয়ালি। রবিবার সকালেই তিনি বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে আরোহণ করেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লোৎসে জয় করলেন পিয়ালি।