ছবির বাঁ দিকে মৃত তৃণমূল নেতা দিলীপ রাম এবং ডানদিকে খুনে অভিযুক্ত বিজেপি নেতা সঞ্জয় মিশ্র। ছবি:নিজস্ব চিত্র।
ব্যান্ডেলের পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী দিলীপ রাম খুনের ঘটনায় সঞ্জয় মিশ্র নামে এক বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করল চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের বিশেষ বাহিনী। বৃহস্পতিবার রাতে বিহারের পটনা থেকে গ্রেফতার করা হয় সঞ্জয়কে। পুলিশ জানিয়েছে, দিলীপের পরিবারের করা এফআইআরে সঞ্জয় অন্যতম অভিযুক্ত।
গত শনিবার সকালে অফিস টাইমে ভিড়ে ঠাসা ব্যান্ডেল স্টেশনে খুন হন ব্যান্ডেল পঞ্চায়েতের প্রধান ঋতু সিংহের স্বামী দিলীপ রাম। পূর্ব রেলের কর্মী দিলীপ ওই এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা হিসাবে পরিচিত ছিলেন। এলাকার মানুষদের দাবি, বকলমে পঞ্চায়েত প্রধানের কাজ চালাতেন দিলীপ নিজেই। ওই দিন সকালে, অন্য দিনের মতো লাইন পেরিয়ে পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রেন ধরার সময় খুব কাছ থেকে দু’জন দুষ্কৃতী মাথায় গুলি করে দিলীপকে। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। তাঁকে প্রথমে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গুলি বার করার জন্য অস্ত্রোপচার করা হয়। তার পর তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় দিলীপের।
ঘটনার পর থেকেই দিলীপের পরিবার এবং হুগলি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তপন দাশগুপ্ত অভিযোগ করেছিলেন, খুনের পিছনে রয়েছে বিজেপি। দিলীপের পরিবার, সঞ্জয় ছাড়াও, বিজু পাসোয়ান এবং অর্জুন সিংহ নামে দুই ব্যক্তির নাম অভিযুক্ত হিসাবে উল্লেখ করেন এফআইআরে। ওঁরা দু’জনই সক্রিয় বিজেপি কর্মী এবং এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে প্রার্থী হয়েছিলেন। সঞ্জয় ওই এলাকার বিজেপি নেতা হিসাবে পরিচিত।
আরও পড়ুন: নোটবন্দির ধাক্কা সামলাতে গাঁজা-আফিমের চাষ করছে মাওবাদীরা!
আরও পড়ুন: মালদহ ছেড়ে এ বার করিডর সরছে দিনাজপুরে! জালে ৩, উদ্ধার সাড়ে ৬ লাখের জাল নোট
ঘটনার পরের দিনই চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অখিলেশ চতুর্বেদীকে অপসারণ করে দায়িত্ব দেওয়া হয় হুমায়ুন কবীরকে। সূত্রের খবর, অখিলেশের কাজে খুশি ছিল না শাসক দল। সেই চাপেই সরানো হয় তাঁকে। পুলিশ সূত্রে খবর, দায়িত্ব নিয়েই দিলীপ রাম খুনের তদন্তের জন্য বিশেষ দল তৈরি করেন নতুন কমিশনার। সেই বিশেষ দলই পটনা থেকে গ্রেফতার করে সঞ্জয় মিশ্রকে। এ দিন তাকে হুগলি জেলা আদালতে তোলার সময় খুনের সঙ্গে যোগের কথা অস্বীকার করেন সঞ্জয়। তিনি বলেন, ‘‘দিলীপ রামের খুনের সঙ্গে তাঁর বা বিজেপির কোনও যোগ নেই। তৃণমূল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।” পুলিশ সঞ্জয়কে জেরা করার জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়েছে।