এই চিত্র দেখা যাবে না কোনও বুথে।—ফাইল চিত্র।
পুলিশ-প্রশাসনের তালিকা তৈরি। আর বুথ ভাঙাগড়ার হিসেবনিকেশ। এই দুই প্রক্রিয়াকে সঙ্গী করে বঙ্গে আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচন প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকদের তালিকা তৈরির জন্য জেলা নির্বাচন অফিসার তথা জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও)। আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে তা প্রস্তুত করতে হবে জেলা প্রশাসনকে। ২৯ জুন, সোমবার সিইও দফতর থেকে তেমনই নির্দেশ পেয়েছে জেলা প্রশাসন। সেই মতো তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে বিভিন্ন জেলা প্রশাসন। সাধারণত, বিধানসভা বা লোকসভা নির্বাচনের বছরখানেক আগে থেকে নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের তালিকা তৈরি শুরু হয়। কোভিড-১৯’র কারণে কিছুদিন দেরি হয়েছে। তার সঙ্গে রয়েছে বুথের ভোটার সংখ্যার হিসেবনিকেশও। তা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা প্রশাসনের কাছে নির্দেশ না এলেও বিভিন্ন জেলায় বুথের জায়গা নিয়ে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছে।
করোনা প্রতিরোধের অন্যতম শর্ত দূরত্ববিধিকে ভোটে মান্যতা দিতে হলে বুথে ভোটার সংখ্যা কমাতে হবে। আর তার জন্য বুথ বাড়াতে হবে। ফলে একটি বুথকে ভেঙেই আরেকটি বুথ তৈরি করতে হবে। তার হিসাব করছে জেলা প্রশাসন। বঙ্গে কত ভোটার পিছু একটি বুথ হবে, তা নিয়ে স্পষ্ট কিছু সিদ্ধান্ত নেয়নি নির্বাচন কমিশন। সর্বোচ্চ এক হাজার নাকি আটশো ভোটার পিছু বুথ হবে তা নিয়ে চর্চা চলছে কমিশনের অন্দরে। রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনে বুথ ছিল ৭৮,৭৯৯ টি। চলতি বছরের মার্চে প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ তালিকা অনুসারে ভোটার প্রায় ৭.২০ কোটি। তারপরের হিসাব অনুসারে বুথ হওয়ার কথা ৭৮,৮০৪ টি। এহেন পরিস্থিতিতে বুথ পিছু সর্বোচ্চ আটশো ভোটার হলে বঙ্গে বর্তমান বুথের সঙ্গে আরও ৫০ হাজারের বেশি বুথ বাড়বে। তা এক হাজার হলে প্রায় ৩৭ হাজার বুথ বাড়বে। বিপুল পরিমাণে বুথ তৈরির জায়গা কোথায় মিলবে, তা নিয়ে চিন্তিত সিইও দফতর থেকে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। বিশেষ করে শহরে (অন্য জেলার তুলনায় কলকাতা, হাওড়ার ক্ষেত্রে বেশি) যেখানে একটি ভোটগ্রহণ চত্বরে চার-পাঁচটি করে বুথ থাকে। বাড়তি বুথের সঙ্গে ভোটকর্মীর সংখ্যাও বাড়বে।
ফালাকাটা বিধানসভার উপনির্বাচনের প্রস্তুতির নিচ্ছে কমিশন। বর্তমানে ফালাকাটা বিধানসভায় ২৬৬টি বুথ রয়েছে। সেখানে বুথ পিছু সর্বোচ্চ আটশো ভোটার হলে বর্তমান বুথ সংখ্যার সঙ্গে আরও ১৮৯ টি সংযোজিত হবে। তা এক হাজার ভোটার পিছু হলে ৯৫ টি বাড়াতে হবে। বাড়তি বুথের জন্য জায়গা খুঁজতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনকে। শেষ পর্যন্ত ৯২ টি বুথের জায়গা পাওয়া গিয়েছে। বাকি বুথ অস্থায়ীভাবে করতে হবে। অস্থায়ী বুথের অনুমোদনে কমিশনের অনীহা বরাবরই বেশি। ফালাকাটার প্রসঙ্গ তুলে প্রশাসনের কর্তারা বলছেন, ‘‘ফালাকাটায় বুথ খুঁজতে গিয়ে এই অবস্থা হলে শহরে নতুনে বুথের জন্য কতটা জায়গা পাওয়া যাবে, তা সহজেই অনুমেয়।’’