নদীবাঁধ অস্থায়ী ভাবে মেরামতের কাজ চলছে। যদিও শুক্রবার ভরা কোটালে তা ধুয়ে গিয়েছে। পাথরপ্রতিমা ব্লকের কুয়েমুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে। নিজস্ব চিত্র
কংক্রিটের বাঁধ চাই, আমপান পরিস্থিতি দেখতে এসে বহু এলাকায় এ দাবিই শুনে গেলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। ভরা কোটালের মধ্যে পর্যবেক্ষকদের লঞ্চকে বিপত্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে। পাথরপ্রতিমায় ঢেউয়ের তোড়ে টালমাটাল হয় লঞ্চ।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুগ্মসচিব অনুজ শর্মার নেতৃত্বে সাত সদস্যের আন্তঃমন্ত্রক পর্যবেক্ষক দলটি বৃহস্পতিবার কলকাতা পৌঁছয়। শুক্রবার সকালে সন্দেশখালির ধামাখালি ও পাথরপ্রতিমায় কেন্দ্রীয় একটি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন দুই জেলার প্রশাসনের কর্তারা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে জেলার ক্ষয়ক্ষতির ছবি ও খতিয়ান দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা খুঁটিয়ে সব তথ্য জেনে নেন। তবে এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি তাঁরা। উত্তর ২৪ পরগনার দলটি ধামাখালির গাজিখালি খেয়াঘাট থেকে লঞ্চে রওনা হন। আমপানে ন্যাজাট ১, ২ পঞ্চায়েতে ক্ষয়ক্ষতি প্রচুর। বাউনিয়া এলাকায় নদীবাঁধের বেশির ভাগ জায়গায় অস্তিত্বই নেই। যেখানে বাঁধ এখনও অক্ষত, সেখানে দাঁড় করানো হয় লঞ্চ। ছুটে আসেন এলাকার বাসিন্দারা। সকলের দাবি, বাঁধ কংক্রিটের করা হোক। না হলে ফি বছর ভাসবে বাড়ি-ঘর, জমি জিরেত। পরে প্রশাসনের সঙ্গে আরও এক দফা কথা বলে দলটি।
আর একটি দল গাড়িতে গোপালনগর পঞ্চায়েতের উত্তর গোপালনগর গ্রামে পৌঁছয়, গোবদিয়া নদীর পাশের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে। স্থানীয় বাসিন্দা শম্ভু দাস বলেন, “তিন বিঘা জমিই আমার সম্বল। নোনা জলে জমি শেষ। মাছ মরে গিয়েছে। খাব কী?” বাঁধ মেরামতের পরেও গ্রামে জল ঢুকছে বলে অভিযোগ তাঁদের। পরে পাথরপ্রতিমা জেটিঘাট থেকে চারটি লঞ্চ রওনা দেয় জি-প্লটের দিকে। কিন্তু ভরা কোটালের জন্য দেড় ঘণ্টা ধরে নদীতেই পাক খেতে হয়। বঙ্গোপসাগরের মোহনার কাছে প্রবল ঢেউয়ে লঞ্চ প্রায় উল্টে যাওয়ার অবস্থা হয়। চার ঘণ্টা পরে পাথরপ্রতিমায় ফিরে মাধবনগর গ্রামে যায় দলটি। কাকদ্বীপের মহকুমাশাসক শৌভিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওঁরা সব কিছু দেখলেও পরবর্তী পদক্ষেপ জানাননি।” আজ, শনিবার নবান্নে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহের সঙ্গে বৈঠক করার কথা প্রতিনিধি দলের। সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির হিসাব দেবে।