সন্দেশখালিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী। — ফাইল চিত্র।
আপাতত শান্ত সন্দেশখালিতে এখন জনসংযোগের জোয়ার। এক দিকে মহিলাদের স্বাস্থ্য ও চোখ পরীক্ষার শিবির করতে ব্যস্ত রাজ্য পুলিশ। অন্য দিকে, কেন্দ্রীয় বাহিনী দু’বেলা টহল দেওয়ার সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের সুখ-দুঃখের খবর নিচ্ছে। স্কুল পড়ুয়াদের লেখাপড়া কেমন চলছে, সে খোঁজও রাখছেন জওয়ানেরা। একশো দিনের কাজের মজুরি দেওয়ার পাশাপাশি বিডিও-সহ সরকারি আধিকারিকেরা আবার জানতে চাইছেন, আরও কী কী সমস্যা আছে?
জনসংযোগের জোয়ার চলছে যেন সন্দেশখালিতে।
এ দিন সন্দেশখালি থানার খুলনা বাজার, শান্তির ঘেরি, পাত্র পাড়ায় ও ন্যাজাটের বেশ কিছু জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনী রুটমার্চ করে। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে এলাকা চেনায় স্থানীয় পুলিশ। এ দিন খুলনা বাজারে দেখা গেল, পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা স্থানীয়দের কাছে জানতে চান বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে। কোনও অসুবিধা হলে জানাতেও বলেন।
এর মধ্যে, রাজ্য পুলিশের তরফে গ্রামের মানুষের জন্য চোখ পরীক্ষা ও মহিলাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য দু’দিনের শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে সন্দেশখালি থানার দক্ষিণদ্বারিরজাঙ্গাল গ্রামে। সন্দেশখালির মহিলারদের আন্দোলনের মুখ হয়ে ওঠা কয়েক জনকে এই শিবিরে দেখা গেল। তাঁরাই রাজ্য পুলিশ আয়োজিত এই শিবিরের ব্যবস্থাপনায় ছিলেন বলে জানালেন। উপস্থিত ছিলেন সন্দেশখালি ২-এর বিডিও অরুণকুমার সামন্ত ও সন্দেশখালি থানার ওসি বিশ্বজিৎ সাঁপুই। স্বাস্থ্য শিবিরে বিডিও গ্রামবাসীদের বলেন, ‘‘ভয়-ভীতির পরিবেশ নেই এখন। আপনাদের যার যা অভিযোগ আছে, পুলিশের কাছে বা আমাকে জানাবেন।’’
স্বাস্থ্য শিবিরে আসা মহিলারা অভিযোগ করেন, ‘‘পানীয় জলের খুব সমস্যা। গরমের শুরুতেই গ্রামের বেশিরভাগ কল থেকে জল পাওয়া যাচ্ছে না।’’ বিডিও আশ্বাস দিয়েছেন, দ্রুত পানীয় জলের সমস্যার সমাধান হবে। পুলিশ সূত্রে খবর, আগামী কয়েক দিন সন্দেশখালি পঞ্চায়েত এলাকার একাধিক জায়গায় এমন স্বাস্থ্য শিবির হবে। এ দিন খুলনা খেয়াঘাটে পুলিশের তরফে অভিযোগ গ্রহণের শিবিরও খোলা হয়।
১৪৪ ধারার মোড়কে থাকা সন্দেশখালিতে জনসংযোগ করতে মঙ্গলবার ‘চায়ে পে চর্চা’ কর্মসূচিতে এলেন রাজ্য বিজেপি নেতা ইন্দ্রানীল খাঁ। ধুচনিখালি বাজারে চায়ের আসরে দলীয় কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেন।
অন্য দিকে, সিবিআই তদন্তের নির্দেশ নিয়ে অশোকনগরে দলীয় সভায় এসে সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের নিরাপদ সর্দার বলেন, ‘‘হাই কোর্টের এই নির্দেশ সন্দেশখালির মানুষের কাছে বিরাট জয়।’’
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘আমরা চাই সত্য উদঘাটন হোক। সিবিআই, ইডি তদন্ত করলেই যে কিনারা হয়ে যাবে এমনটা তো নয়। আমরা তো দেখেছি হোঁচট খেতে। কোর্টের নির্দেশে নয় তদন্ত হওয়া উচিত কোর্টের নজরদারিতে।’’