স্বাস্থ্য পরিষেবায় খারাপ ফল, কমবে টাকার ভাগ

স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ক্ষেত্রে ঘাটতির কথা মেনে নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরও। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ত্রুটি শোধরানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।

Advertisement

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:০২
Share:

ফাইল চিত্র।

পাশ করতে পারল না পশ্চিমবঙ্গ। খারাপ ফলের জন্য ‘জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন’-এর বরাদ্দ টাকার ২০ শতাংশ তারা পাবে না বলে কেন্দ্র থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

সম্প্রতি প্রকাশিত জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ২০১৮-১৯ সালের বিশেষ রিপোর্টে লেখা রয়েছে, ওই এক বছরে দেশের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি স্বাস্থ্য পরিষেবাকে উন্নত করতে কতটা কাজ করতে পেরেছে। নরেন্দ্র মোদী সরকারের সেই রিপোর্টে স্বাস্থ্য পরিষেবা ও পরিকাঠামোর নিরিখে সব চেয়ে খারাপ ফল করা পাঁচ রাজ্যের মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যের নম্বর -৭। বাকি চারটি রাজ্য মধ্যপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, বিহার ও লক্ষদ্বীপ। সবচেয়ে ভাল ফল করা পাঁচটি রাজ্য হল যথাক্রমে দাদরা ও নগর হাভেলি, হরিয়ানা, পঞ্জাব, অসম ও কেরল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাত পেয়েছে ৫।

স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ক্ষেত্রে ঘাটতির কথা মেনে নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরও। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ত্রুটি শোধরানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে কেন্দ্রের সঙ্গে নীতিগত ও পদ্ধতিগত মতভেদের জন্যও সমস্যা হয়েছে বলে তিনি জানান। তবে স্বাস্থ্য দফতরের চিন্তা হল, স্বাস্থ্য মিশন যে ২০ শতাংশ টাকা আটকে দেবে, তা জোগাড় করা। কারণ, রাজ্যের ভাঁড়ারে টানের কথা এর আগে খোদ মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে জানিয়েছেন। ঘটনাচক্রে, স্বাস্থ্য দফতরও মুখ্যমন্ত্রীর অধীনে।

Advertisement

জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন সূত্রের খবর, পূর্ণাঙ্গ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরিষেবা ও পরিকাঠামোর উন্নয়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। ঠিক হয়েছিল, ৮০ শতাংশ অর্থ মিশন বাধ্যতামূলক ভাবে সব রাজ্যকে দেবে। বাকি ২০ শতাংশ (যার আর্থিক মূল্য ৩২৬৫ কোটি টাকা) ভাল কাজ করে রাজ্যগুলিকে অর্জন করতে হবে। তারা যদি লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে না পারে, তা হলে ওই ২০ শতাংশ অর্থ পাবে না।

রিপোর্ট অনুযায়ী, নীতি আয়োগ পশ্চিমবঙ্গকে খুবই খারাপ নম্বর (-২) দিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘নীতি আয়োগের সঙ্গে কিছু কিছু ব্যাপারে আমাদের সংঘাত রয়েছে। ওরা অনেক তথ্য চায়। কিন্তু আমাদের রাজ্যের নীতি অনুযায়ী সেগুলো আমরা দিই না। এ ব্যাপারে কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলি।’’ সাব সেন্টারগুলিকে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে উন্নীত করার কাজে সবচেয়ে খারাপ ফল পশ্চিমবঙ্গের। সেখানে তারা -২০ পেয়েছে। স্বাস্থ্য অধিকর্তার ব্যাখ্যায়, ‘‘এ ব্যাপারে কাজ শুরু করতে আমাদের দেরি হয়েছে। এখানে হাইপারটেনশন, ক্যানসার, ডায়াবেটিসের মতো বিভিন্ন রোগের স্ক্রিনিং করার কথা। রোগীদের দেখাশোনা করার জন্য থাকবেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স। এই প্রশিক্ষণ শুরু করতে দেরি হয়েছে। আশা করছি, এখন থেকে ঠিকঠাক কাজ হবে। ১০ হাজার সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র আমাদের তৈরি করতে হবে।’’

পশ্চিমবঙ্গ খারাপ নম্বর (-১৫) পেয়েছে মানবসম্পদ সংক্রান্ত তথ্য ব্যবস্থায় এবং মানসিক রোগের চিকিৎসা (প্রাপ্ত নম্বর -৫) পরিকাঠামোতেও। স্বাস্থ্য অধিকর্তার কথায়, ‘‘মানসিক রোগের চিকিৎসায় একটু পিছিয়ে আছে রাজ্য। তবে ব্রিটেনের একটি ইনস্টিটিউট এবং নিমহ্যান্সের সঙ্গে আমরা এই চিকিৎসার ব্যাপারে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। ভিডিয়ো কনফারেন্স করা হচ্ছে। কিছু দিনের মধ্যে আর সমস্যা থাকবে না।’’ তবে তথ্য জানানোর বিষয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কর্মীদের ডেটাব্যাঙ্ক বা স্বাস্থ্যের সব তথ্য আমরা কেন্দ্রের সঙ্গে ভাগ করি না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement