সোমবার বিধানসভায় বাতিল হবে সিমেন্ট কেনার আইন। প্রতীকী ছবি
সিমেন্ট কেনার কোনও আইন যে পশ্চিমবঙ্গে এতদিন বলবৎ ছিল, তা জানা ছিল না বেশির ভাগ মানুষের। তাই এ বার সেই আইন বিলুপ্তির পথে। সূত্রের খবর, এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য দফতর। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিধানচন্দ্র রায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সিমেন্ট সংক্রান্ত একটি আইন তৈরি করা হয়েছিল। ১৯৪৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ‘দি ওয়েস্ট বেঙ্গল সিমেন্ট কন্ট্রোল বিল’ আনা হয়। সিমেন্ট কেনার জন্য তৈরি হয় নতুন আইন। তৎকালীন দেশ ও রাজ্যের কথা মাথায় রেখেই এই আইনটি তৈরি করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে খাদ্য দফতর। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই আইনের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়েছে বলেই দাবি খাদ্য দফতরের।
১৯৪৮ সালে তৈরি এই আইনে বলা হয়েছিল, কোনও ব্যক্তি যদি সিমেন্ট কিনতে চান তবে তাঁকে আগে রাজ্য সরকারের কাছে লিখিত আবেদন করতে হবে। সঙ্গে জানাতে হবে তার সিমেন্ট ক্রয় করার কারণ। এবং কত পরিমাণ সিমেন্ট লাগবে তাও আগেই জানিয়ে দিতে হবে। সরকার অনুমতি দিলে তবেই সিমেন্ট কেনা যাবে। আইন তৈরির পর বিষয়টি দেখভালের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল খাদ্য দফতরকে। কিন্তু গত ৭৪ বছর ধরে এই আইনটি কেবল খাতায় কলমেই রয়ে গিয়েছে। বরং সময়েরসঙ্গে সঙ্গে নগরায়ন বৃদ্ধির কারণে সিমেন্টের চাহিদা দিন প্রতিদিন বাড়তে থাকে। এক সময় খোলা বাজারেই বিক্রি হতে শুরু করে সিমেন্ট। তাই খাদ্য দফতরও আর এই আইনের ব্যবহার করেনি। ফলে অকেজো এই আইনকে পুরোপুরি তুলে দেওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন খাদ্য দফতরের কর্তারা।
এত বছর পর এ বার সেই আইনের বিলুপ্তি ঘটাতে চলেছে রাজ্য সরকার। আগামী সোমবার বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের শেষদিন। ওইদিনই রাজ্য বিধানসভায় আনা হবে ‘দি ওয়েস্ট বেঙ্গল সিমেন্ট কন্ট্রোল (রিপিলিং) বিল ২০২২’। বিলটি পেশ করবেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। খাদ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘অনেক দিন ধরেই দফতরে এই আইনটিকে পুরোপুরি তুলে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছিলই। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক খাদ্যমন্ত্রী পদে থাকাকালীনই এ বিষয়ে অনেকটা কাজ এগিয়েছিল। এ বার অনেক আগে থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিলটি তৈরি করা হয়েছিল। সোমবার বিলটি বিধানসভায় পাশ হয়ে গেল। তা পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যাবে।’’