গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
আপনারা কি সত্যিই রাজীব কুমারকে খুঁজছেন, না কি তাড়িয়ে বেড়াচ্ছেন? দেখাতে চাইছেন, সিবিআইয়ের ভয়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন কলকাতার প্রাক্তন সিপি? প্রশ্ন শুনে গোঁফের ফাঁকে মুচকি হাসেন সিবিআইয়ের অফিসার।
কলকাতা হাইকোর্ট গত শুক্রবার রায় দিয়েছে, সিবিআই চাইলে রাজীবকে গ্রেফতার করতে পারে। তার আগে থেকেই সিবিআই তাঁকে নাগালে পেতে মরিয়া। অথচ রায়ের পর থেকে সিবিআই না কি রাজীবকে খুঁজে পাচ্ছে না!
আপনারা রাজীবের বাড়িতে বা দফতরে নজর রাখছিলেন না? বাইরে সাদা পোশাকের লোক ছিল না? একজন আইপিএস অফিসার কোথায় গিয়ে আস্তানা নিলেন, তা কি ‘ফলো’ করলেই জানা যায় না? দিল্লিতে সিবিআই সদর দফতরের অফিসার পাল্টা বলেন, ‘‘আমরা কি এতটাই বোকা?’’ তা হলে কী দেখাতে চাইছেন? কলকাতার প্রাক্তন সিপি সিবিআইয়ের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন? উপরমহলে চাপ তৈরির চেষ্টা? জবাব মেলে না।
একই প্রশ্ন উঠেছিল মাস খানেক আগে। ২০ অগস্ট দিল্লি হাইকোর্ট প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে। চিদম্বরম আদালত থেকে গাড়িতে বেরিয়ে যান। সিবিআই, ইডি অফিসারেরা হাজির হন তাঁর বাড়িতে। চিদম্বরম বাড়িতে ছিলেন না। সিবিআই কার্যত তাঁকে ‘পলাতক’ ঘোষণা করে দরজায় নোটিস সেঁটে দিয়ে আসে।
অথচ চিদম্বরম দিল্লিতেই ছিলেন। পর দিনই কংগ্রেসের সদর দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে বাড়িতে ফেরেন। টিভি ক্যামেরার সামনে চিদম্বরমের বাড়ির দেওয়াল টপকে তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। টানা ৩০ ঘন্টা সত্যিই চিদম্বরমের খোঁজ মেলেনি? না কি দেখানো হচ্ছিল, কংগ্রেসের দুঁদে নেতা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন? সে বারও মুচকি হেসে সিবিআই অফিসারেরা বলেছিলেন, ‘‘চিদম্বরম মোবাইল বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। নিজের কাছে রাখেননি। বাড়িও যাননি।’’ প্রশ্ন ওঠে, দেশের ‘প্রিমিয়ার ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সি’-র অফিসারেরা হাইকোর্ট থেকে চিদম্বরমকে ‘ফলো’ করেননি? শুধুই মোবাইল ট্র্যাক করছিলেন?
এ বারও সিবিআইয়ের দাবি, রাজীবের এবং দেহরক্ষীর মোবাইল বন্ধ! কিন্তু রাজীবের হয়ে আইনজীবীরা আদালতে ছুটছেন। অর্থাৎ রাজীব আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলছেন, অথচ সিবিআই তাঁর খোঁজ পাচ্ছে না! অনেকেই বলছেন, এ তো রূপকথা মশাই! জবাবে? সেই মুচকি হাসি।