ফাইল চিত্র।
হাই কোর্টের নির্দেশে তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখ খুনের তদন্তভার পাওয়ার পরে শনিবার সকাল থেকেই তৎপরতা শুরু সিবিআইয়ের। এ দিন এক তদন্তকারী আধিকারিক রামপুরহাট আদালতে এসে ভাদু-খুনের এফআইআর কপি-সহ তদন্তভার নেওয়ার রায়ের কপি জমা দেন। পরে সিবিআই এর স্পেশাল ক্রাইম ব্রাঞ্চের এসপি সঞ্জয় সিংহর নেতৃত্বে আট জনের তদন্তকারী দল রামপুরহাট থানায় পৌঁছে ভাদু-খুনের কেস ডায়েরি সহ অন্যান্য কাগজপত্র সংগ্রহ করে।
সেই সময় পুলিশ হেফাজতে থাকা ভাদু-খুনের ৫ জন অভিযুক্তকে থানায় নিয়ে আসা হয়। সূত্রের খবর, ২১ মার্চ রাতে ভাদু খুন হওয়ার পরে তাঁর দাদা বিকির আলি যে এফআইআর করেছিলেন, সেটাকে ভিত্তি করেই সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে তিন জনের নাম লিখিত অভিযোগে নেই। ৬ জন ধৃতের মধ্যে হানিফ শেখ বর্তমানে জেল হেফাজতে আছে। মেডিক্যাল টেস্টের পরে ওই ৫ জনকে রামপুরহাট এসিজেএম আদালতে তোলা হয়।
সিবিআইয়ের আইনজীবী বিচারকের কাছে ঘটনার পুনর্গঠন এবং তদন্তের স্বার্থে ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানান। ওই ৫ জনকে চার দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করার জন্য ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে মাঝখণ্ড মোড় সংলগ্ন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পরিদর্শন কুঠিতে, সিবিআই অস্থায়ী শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই পাঁচ জনের মধ্যেই রয়েছেন নুর ইসলাম ওরফে সঞ্জু শেখ। তিনি বগটুই গ্রামের সোনা শেখের ছেলে। এই সোনা ও সঞ্জুর বাড়ি থেকেই ২২ মার্চ ভোরে সাত জনের অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছিল। নিহতদের মধ্যে সঞ্জুর মা-ও রয়েছেন। এ দিন আদালত চত্বরে সঞ্জু বলেন, ‘‘ভাদু শেখ গুন্ডা, মস্তান ও মাফিয়া ছিল। আমার বাড়িতে আগুন লাগিয়েছে ভাদুর লোকজন। অথচ পুলিশ আমাকেই গ্রেফতার করেছে!’’ আর এক ধৃত ভাসান শেখের দিদি মফেজা বিবির দাবি, ‘‘ঘটনার দিন ভাই বাইরে ছিল। বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আমার মাকে ওরা মারধর করে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। অথচ পুলিশ বিনা দোষে ভাইকে গ্রেফতার করেছে।’’ ভাসান-মফেজার মা মিনা বিবিও নিহত হয়েছেন ভাদু-খুনের পরের হামলায়।
অনুব্রতের রিপোর্ট পেল সিবিআই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অনুব্রত মণ্ডলের শারীরিক অবস্থার বিস্তারিত রিপোর্ট শনিবার সিবিআই দফতরে পাঠিয়েছেন এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে তদন্তকারীদের সূত্রের দাবি, বীরভূমের তৃণমূল সভাপতির একগুচ্ছ ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট রয়েছে। রিপোর্টে হৃদরোগ, শ্বাসকষ্ট ও লিভারের সমস্যা-সহ নানা বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। ওই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিবিআই কর্তারা। গরু পাচার মামলায় অনুব্রতকে তলব করেছিল সিবিআই। তার পরেই ‘অসুস্থতাজনিত’ কারণে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিনি।
এ দিকে, কয়লা কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত বিনয় মিশ্রের ভাই বিকাশকে শুক্রবার গরু পাচার কাণ্ডে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে সিবিআই। এ দিন তাঁর শারীরিক অবস্থার পরীক্ষার জন্য কলকাতার সেনা হাসপাতাল (কম্যান্ড হাসপাতাল) নিয়ে যান তদন্তকারীরা। মাস ছয়েক আগে বাইপাস সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতাল থেকে বিকাশকে কয়লা পাচার কাণ্ডে গ্রেফতার করে সিবিআই। কিন্তু আদালতে পেশের পর থেকেই দীর্ঘদিন এসএসকেএমের উডর্বান ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল বিকাশ।