ছবি: সংগৃহীত।
সারদা-রোজভ্যালির পাশাপাশি এ বার ছোট কয়েকটি চিটফান্ড মামলাতেও তদন্তের গতি বাড়াল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। সোমবার সিবিআইয়ের ১৩টি দল এ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনা, বিহারের পটনা এবং ত্রিপুরার আগরতলার ১১টি জায়গায় চক্র ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের অফিস, ডিরেক্টরদের বাড়িতে দিনভর তল্লাশি চালায়।
সিবিআই সূত্রে ইঙ্গিত, সারদা-রোজভ্যালির মতো চক্র গোষ্ঠীর সঙ্গেও যোগ রয়েছে এ রাজ্য এবং ত্রিপুরার এক শ্রেণির প্রভাবশালী ব্যক্তির। তদন্তকারীদের ইঙ্গিত, তল্লাশিতে উঠে আসা নথিতে এ রাজ্যের এমন এক হেভিওয়েট নেতার যোগসূত্র মিলেছে যাঁর নাম গত পাঁচ বছরে কোনও চিটফান্ড মামলায় ওঠেনি।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে শৌভিক চৌধুরী নামে এক লগ্নিকারী নির্দিষ্ট সময়ে টাকা ফেরত না পেয়ে প্রথম চক্র গোষ্ঠী এবং তার কর্ণধার পার্থ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে গরফা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এর পর ওই বছরেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং কলকাতায় আরও ছ’টি মামলা হয় চক্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। ২০১৬ সালে বিষয়টি নজরে আসে সেবির। তাঁরাও চক্র গোষ্ঠীর বাজারে ছাড়া নন কনভার্টিবল রিডিমেবল ডিবেঞ্চার-কে বেআইনি ঘোষণা করে টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ২০১৭ সালে সব ক’টি মামলার ভিত্তিতে সিবিআইয়ের অর্থনৈতিক অপরাধ দমন শাখা তদন্তভার হাতে নেয়।
আরও পড়ুন: ‘প্রধান বিচারপতির পদকে সম্মান করুন’, সরকারি আইনজীবীদের বয়কটের জবাবে হাইকোর্টের বিচারপতি
প্রাথমিক তদন্তের পর চক্র গোষ্ঠীর নথিপত্র থেকে সিবিআই আধিকারিকদের ধারণা, প্রায় ৮৭ কোটি টাকা বাজার থেকে তুলে প্রতারণা করেছে পার্থ চক্রবর্তী এবং তার সঙ্গী বিপ্লব হালদার-সহ চক্র ইনফ্রাস্ট্রাকচারের কর্তারা। টাকা বাজার থেকে তুলে ২০১৪ সালের প্রথম দিক থেকেই একে একে তাদের অফিস বন্ধ করে দিতে শুরু করে এরা।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে বেতন নিয়ে ফের সংশয়ে রাজ্যের কর্মীরা, অস্বস্তি ঢাকছে তৃণমূলের সংগঠনও
সিবিআই আধিকারিকদের ইঙ্গিত, যে টাকার অঙ্ক খুব বেশি না হলেও, সারদা বা রোজভ্যালির মতোই এই গোষ্ঠীর কর্তারাও রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছেন চিটফান্ড ব্যবসা চালাতে। সেই সক্রিয় সহযোগিতার বিনিময়ে আর্থিক ভাবেও লাভবান হয়েছেন ওই প্রভাবশালী পৃষ্ঠপোষকরা। তদন্তকারীরা এখনই সেই প্রভাবশালীদের নাম প্রকাশ্যে আনতে চাননি। তবে তাঁদের একাংশের ইঙ্গিত, ইতিমধ্যে উদ্ধার হওয়া নথি থেকে শাসক দলের এক নেতার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা সামনে এসেছে। সিবিআই আধিকারিকদের দাবি, চক্র গোষ্ঠীর কর্তারাও জেরায় জানিয়েছেন যে ওই নেতা আর্থিক ভাবে লাভবান হয়েছেন চক্র গোষ্ঠী থেকে। এক সিবিআই আধিকারিক বলেন, ‘‘উদ্ধার হওয়া নথি খতিয়ে দেখে ওই নেতাকে ডাকা হবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। আমরা জানতে চাইব তিনি কতটা যুক্ত ছিলেন।” সিবিআই আধিকারিকরা ওই নেতার নাম না বললেও, তাঁরা দাবি করেছেন, এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যের চিটফান্ড বা নারদ স্টিং অপারেশনে অনেক নেতার নাম সামনে এসেছে। কিন্তু ওই নেতার নাম এখন পর্যন্ত সিবিআইয়ের কোনও মামলাতেই আসেনি।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।