—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক খুন ও ধর্ষণের ঘটনার তথ্যপ্রমাণ লোপাটের কি চেষ্টা হয়েছিল আর জি করে? তা হয়ে থাকলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও তদন্তকারী অফিসারদের তাতে কী ভূমিকা রয়েছে— এই প্রশ্নের আদালতগ্রাহ্য উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছে সিবিআই।
সিবিআইয়ের এক কর্তা বুধবার বলেন, “তদন্তের অভিমুখ মূলত দু’টি। ধর্ষণ, খুন কী ভাবে ঘটে এবং কেউ কি কোনও ভাবে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছে? বিভিন্ন সাক্ষ্যপ্রমাণ, ফরেন্সিক পরীক্ষার বেশ কিছু রিপোর্ট ও বিভিন্ন জনের পলিগ্রাফ পরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে এই প্রশ্নগুলির আদালতগ্রাহ্য উত্তর খোঁজার চেষ্টা চলছে।” ওই কর্তার কথায়, “কেউ প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করলে বা তদন্তের অভিমুখ গুলিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করলেও রেহাই পাবেন না। কঠিন ধারায় মামলা হবে।”
তদন্তকারীদের বিশেষ করে ভাবাচ্ছে গত ৯ অগস্ট সকালের ঘটনা। চেস্ট মেডিসিনের সেমিনার রুমে কর্তব্যরত চিকিৎসক-পড়ুয়ার দেহ পড়ে আছে শুনেও পুলিশকে খবর দিতে দেড় ঘণ্টা কাবার হয়েছিল। কলকাতা পুলিশের দাবি, তদন্তে নেমে তারা মৃতদেহের চারপাশে লক্ষ্মণরেখা কেটে দিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ আসার আগে ওই ঘর আর জি করের বড় কর্তা, মেজো কর্তা, সিনিয়র, জুনিয়র ডাক্তার, বিভিন্ন আধিকারিকে গিজগিজ করছিল বলে নানা জনের সঙ্গে কথা বলে সিবিআইয়ের ধারণা ‘পোক্ত’ হয়েছে। আর জি করের কর্তাব্যক্তিদের বেশির ভাগের জবাবেই সিবিআই সন্তুষ্ট নয় বলে দাবি। তদন্তকারী এক অফিসারের কথায়, “রাতে সেমিনার রুমে ‘অপরাধে’ কারা জড়িত? ক’জন ওই ঘরে ঢুকেছিল? না কি অপরাধ অন্য কোথাও ঘটিয়ে ওই ঘরটিতে কয়েক জন ঢুকে মৃতদেহ ফেলে দিয়ে যায়, তা বোঝার চেষ্টা চলছে। ঘটনাস্থলে এত পায়ের ছাপের জন্যও নিশ্চিত কিছু বোঝা জটিল।”
এই অবস্থায় নিহতের সুরতহাল, ময়না তদন্ত ও বিভিন্ন ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্টই সিবিআইয়ের কাছে তদন্তের বড় ভরসা। একাধিক ব্যক্তি ওই চিকিৎসক-পড়ুয়ার উপরে নির্যাতন করেছিল কি না, ফরেন্সিক রিপোর্টেই তার সুস্পষ্ট জবাব মিলবে, মনে করছেন তদন্তকারীরা। সংশ্লিষ্ট ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিকে তারা চিঠিতে তাগাদা দিয়েছে বলে দাবি সিবিআইয়ের। আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের পলিগ্রাফ পরীক্ষা চলছে। এ দিনও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন সিবিআই কর্তারা। আর জি করের ঘটনাস্থল থেকে যিনি ফরেন্সিক তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেন, বেলগাছিয়ার রাজ্য ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির সেই আধিকারিক সনৎকুমার সাহাকেও এ দিন জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। অতি স্পর্শকাতর এই তদন্তের রিপোর্ট মুখবন্ধ খামেই কোর্টে জমা দেবে সিবিআই। তবে কিছু ‘প্রভাবশালী’র নাম তদন্তে উঠে আসায় বাড়তি সতর্কতার সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে বলে সিবিআই সূত্রের খবর।