ফাইল ছবি
একটানা জিজ্ঞাসাবাদের মুখে তাঁকে পড়তে হয়েছে আগেও। কিন্তু ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ কাকে বলে, টের পাওয়া গেল সোমবার। তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সর্বক্ষণের সঙ্গী ও দেহরক্ষী সেহগাল হোসেন রবিবার সেই যে সিবিআই শিবিরে ঢুকেছিলেন, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত তাঁকে সেখান থেকে বেরোতে দেখা যায়নি। সেহগাল একা নয়, তাঁর সঙ্গে অনুব্রতের আরও তিন দেহরক্ষীর জিজ্ঞাসাবাদ চলছে সেখানে। গরু পাচারের মামলায় পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর এনআইটি-তে সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরে একসঙ্গেই ওই চার জনকে ডেকেছিল সিবিআই। স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ওই চার জনের কাউকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়নি।
ময়ূরেশ্বরের বিধায়ক অভিজিৎ রায়-সহ বীরভূমের দুই তৃণমূল নেতা, কলকাতার ব্যবসায়ী অসীম ভাট এবং ‘বীরভূম নাগরিক কমিটি’র সম্পাদক সুশীল সরকারকেও এ দিন দুর্গাপুরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, সেহগাল ছাড়া অনুব্রতের বাকি তিন দেহরক্ষী হলেন চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়, শান্তনু সেন ও সঞ্জীব গঙ্গোপাধ্যায়। এর আগেও সেহগালকে ডেকে পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা। নিজ়াম প্যালেসে দু’দফায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মুর্শিদাবাদের ডোমকলে তাঁর বাড়িতেও গিয়েছিল সিবিআই। সিবিআই সূত্রের খবর, রক্ষীর মাধ্যমেই গরু পাচারের কারবার চলত মুর্শিদাবাদে।
এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরে যান ময়ূরেশ্বরের বিধায়ক অভিজিৎ রায়। প্রায় ৪০ মিনিট পরে বেরিয়ে তিনি জানান, গত বছর ২ মে তিনি অনুব্রতকে কেন ফোন করেছিলেন, তা জানতে চান সিবিআই আধিকারিকেরা। “আমি বলেছি, ভোটে আমি জিতেছি, সেটা জানাতেই ফোন করেছিলাম,” বলেন অভিজিৎ। পাশাপাশি, ফল ঘোষণার দিনে ইলামবাজারে গোপালনগরে ‘নিহত’ বিজেপি কর্মী গৌরব সরকারের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে। অভিজিতের দাবি, “আমি বলেছি, ওই নামে কাউকে চিনি না।” তার পরে সিবিআইয়ের শিবিরে পৌঁছন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি শেখ আব্দুল মান্নান। তাঁকে প্রায় আধ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ওই নেতার দাবি, অনুব্রতকে ফোন করার বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি নিজের মোবাইল ফোনটি দিয়ে দেন সিবিআইয়ের হাতে। সিবিআই আধিকারিকেরা মোবাইলের ‘কললিস্ট’ পরীক্ষা করেন।
এ দিন কলকাতার ব্যবসায়ী অসীম ভাটকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। অসীমও জানান, গত বছরের ২ মে অনুব্রতকে তিনি ফোন করেছিলেন কেন, তা জানতে চান তদন্তকারীরা। অসীম বলেন, “ভোটে ভাল ফলের জন্য শুভেচ্ছা জানাতেই ফোন করেছিলাম। অফিসারেরা গোপালনগরের হিংসার বিষয়েও জানতে চান। জানিয়েছি, গোপালনগরের নামই শুনিনি।” বীরভূম নাগরিক কমিটির সম্পাদক সুশীলেরও বক্তব্য, গত বছরের ২ মে, ভোটের শুভেচ্ছা জানাতেই ফোন করেছিলেন অনুব্রতকে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।