এসএসসি দুর্নীতি কাণ্ডে শান্তিপ্রসাদ (বাঁ দিকে), সুবীরেশ (মাঝে), কল্যাণময় (ডান দিকে)-এর নামে চার্জশিট সিবিআইয়ের। গ্রাফিক: সৌভিক দেবনাথ।
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় আদালতে চার্জশিট জমা দিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। ওই চার্জশিটে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিংহ, প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়-সহ মোট ১২ জনের নাম রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৬ জন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন।
স্কুল শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে তদন্তে নামে সিবিআই। সিবিআইয়ের জমা দেওয়া চার্জশিটে শান্তিপ্রসাদ, সুবীরেশ, কল্যাণময় ছাড়াও নাম রয়েছে এসএসসির সহকারী সচিব অশোককুমার সাহা, প্রাক্তন প্রোগ্রাম অফিসার পর্ণা বসু এবং সমরজিৎ আচার্যের নামও। অশোককুমার বর্তমানে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন।
চার্জশিটে এসএসসির প্রাক্তন পদাধিকারীরা ছাড়াও নাম রয়েছে শান্তিপ্রসাদ-ঘনিষ্ঠ প্রসন্ন কুমার রায় ওরফে রাকেশ এবং প্রদীপ সিংহ ওরফে ছোটুর। এই দু’জনও এখন জেল হেফাজতে রয়েছেন। সিবিআইয়ের অভিযোগ, রাকেশ এবং প্রদীপ কাজ করতেন শান্তিপ্রসাদের এজেন্ট হিসাবে। তাঁদের মাধ্যমেই ‘অযোগ্য’ প্রার্থীরা শান্তিপ্রসাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন বলেও অভিযোগ। এ ছাড়াও চার্জশিটে নাম রয়েছে জুঁই দাস, মহম্মদ আজাদ আলি মির্জা, ইমাম মমিন, রোহিত কুমার ঝাঁয়ের।
গত বুধবার আলিপুর আদালতে এসএসসি মামলার শুনানির সময় সিবিআই অভিযোগ করেছিল, শান্তিপ্রসাদ, কল্যাণময়েরা সংগঠিত ভাবে অপরাধ করার পাশাপাশি ধরা পড়লে কী ভাবে পিঠ বাঁচাবেন, তারও আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। বিষয়টি আদালতে বুঝিয়েও দেয় সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দাবি করে, এসএসসি মামলায় শান্তিপ্রসাদদের আগে যাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তাঁদের কাছ থেকে এঁরা আগে থেকেই জেনে নিতেন, সিবিআই কী কী প্রশ্ন করছে, কী তথ্য চাইছে। সেই মতো আগে থেকে বাঁচার রাস্তা তৈরি করতে শুরু করেছিলেন তাঁরা। এই অভিযোগ জানিয়ে ধৃতদের হেফাজতে রাখার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদনও করেছিল সিবিআই। যদিও শান্তিপ্রসাদ, কল্যাণময়, অশোকের আইনজীবীরা এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।