সুশান্ত দত্তগুপ্ত।— ফাইল চিত্র
আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের পদ থেকে অপসারিত হয়েছিলেন আগেই। ৪ বছর পরে ওই কাণ্ডে নতুন করে বিপাকে পড়লেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত। এ বার তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)।
২০১৬ সালে অপসারিত হতে হয়েছিল সুশান্ত দত্তগুপ্তকে। কোনও কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার সেই ঘটনা ছিল দেশের ইতিহাসে প্রথম। বছর চারেক আগে ওই কাণ্ডে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্যের শিক্ষামহল। এত দিন পর ফের সেই কাঁটায় ফের বিদ্ধ হতে হল সুশান্ত দত্তগুপ্তকে। অপসারণ পর্বের জন্য সেই সময় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রকের দিকে আঙুল তুলেছিলেন তিনি। কিন্তু কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রক এবং অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়ে দিয়েছেন, সুশান্ত দত্তগুপ্তের অপসারণ প্রক্রিয়ার মধ্যে বেআইনি কোনও পদক্ষেপ নেই। সেই সুপারিশের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য সবুজ সঙ্কেত দেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এর পর বুধবার তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে সিবিআই।
বিশ্বভারতীর বরখাস্ত হওয়া ওই উপাচার্যের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ এনেছে সিবিআই? তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র (১২০বি), বিশ্বাসভঙ্গ (৪০৬), সরকারি কর্মচারি হিসাবে বিশ্বাসভঙ্গ (৪০৯) এবং অপরাধীসুলভ অসৎ আচরণ (১৩/২)-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
আরও পড়ুন: রাজ্যে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত ৬১, স্বস্তি সুস্থতার হারে
আরও পড়ুন: বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে, স্যাটে ফের ধাক্কা রাজ্যের
২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিশ্বভারতীর উপাচার্য পদে যোগ দেন সুশান্ত দত্তগুপ্ত। তার পর থেকেই একের পরে এক বিতর্কে এই কৃতী বিজ্ঞানীর নাম জড়িয়ে পড়ে। কখনও একাধিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা নেওয়ার (জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেনশন, বিশ্বভারতী থেকে বেতন) নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। আবার কখনও বিশ্বভারতীতে আর্থিক গরমিল, বিধি ভেঙে নিয়োগের মতো বিতর্কেও সামনে আসে তাঁর নাম। এমনকি মদ্যপানের ব্যক্তিগত বিল বিশ্ববিদ্যালয় তহবিল থেকে মেটানোর মতো গুরুতর অভিযোগও ছিল সেই তালিকায়। সুশান্তের বিরুদ্ধে স্বর এত তীব্র হতে থাকে যে তদন্ত কমিটি গঠন করে মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রক। সেই কমিটির তদন্ত রিপোর্টেই তাঁকে উপাচার্য পদ থেকে সরানোর সুপারিশ করা হয়। আর তাতে সই করেন বিশ্বভারতীর তৎকালীন আচার্য তথা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।