শেখ সুফিয়ান। —ফাইল চিত্র।
স্বস্তি স্থায়ী হল না ২৪ ঘণ্টাও। ভোট পরবর্তী হিংসায় এক বিজেপি সমর্থককে খুনের মামলায় সুপ্রিম কোর্ট থেকে বুধবার আগাম জামিন পেয়েছিলেন গত বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামে তৃণমূলের মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান। তবে বৃহস্পতিবার জানা গিয়েছে, এই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে স্থানীয় এক মহিলাকে গণধর্ষণের চেষ্টা, মারধর, প্রাণনাশের হুমকি-সহ একাধিক ধারায় নতুন করে মামলা রুজু করেছে সিবিআই। ঘটনায় আবারও চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল।
গণধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগের ঘটনাটিও ভোট পরবর্তীই। বিবাহিত ওই মহিলার অভিযোগ, বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর দিন অর্থাৎ গত বছর ৩ মে তিনি যখন তাঁর বাড়ির উঠোনে জামাকাপড় শুকোতে দিচ্ছিলেন, সেই সময় সুফিয়ান-সহ কয়েক জন বাড়িতে ঢুকে তাঁকে মারধর ও ধর্ষণের চেষ্টা করেন। সূত্রের খবর, গত ২৮ জানুয়ারি সিবিআইয়ের স্পেশাল ক্রাইম ব্রাঞ্চের সটলেক অফিসে সুফিয়ান-সহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান ওই মহিলা। তার ভিত্তিতেই সিবিআই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে।
ঘটনার এতদিন পরে কেন সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ জানালেন? জবাবে ওই মহিলার দাবি, ‘‘এর আগে নন্দীগ্রাম থানায় বহু বার অভিযোগ করেছি। সুফল পায়নি। ভোটের ফল ঘোষণার পরে আমাদের এলাকার ২২টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। তাই এ বার সরাসরি সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।’’ পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে বলছেন, ‘‘গত বছর যে সময়ের কথা অভিযোগে বলা হচ্ছে, তখন জেলায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিরা আসতেন। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকেও একাধিক বিশেষ শিবির করে অভিযোগ নেওয়া হয়েছিল। ওই মহিলা সেখানে অভিযোগ জানালে পুলিশ নিশ্চিতভাবে মামলা করত।’’ অভিযোগকারিণীর অবশ্য বক্তব্য, ‘‘যখন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন নন্দীগ্রামে এসেছিল, সেই সময় বাইরে বেরনোর উপায় ছিল না। তাই অভিযোগ জানাতে পারিনি। আমার স্বামী তো এখনও ঘরছাড়া।’’
সুফিয়ান নিজে বলছেন, ‘‘বিজেপি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করাচ্ছে। সিবিআই দিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে।’’ তৃণমূলের নন্দীগ্রাম ১ ব্লক সভাপতি স্বদেশরঞ্জন দাসেরও দাবি, ‘‘পুরোটাই বিজেপি নেতাদের সাজানো।’’ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অবশ্য অভিযোগ, ‘‘নন্দীগ্রামে শেখ সুফিয়ানের নেতৃত্বেই হিন্দুদের উপর অত্যাচার, খুন, ধর্ষণ হয়েছে।’’