সারদায় সেবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্কও সিবিআই নজরে

সারদা কেলেঙ্কারিতে রক্ষকরাও ভক্ষক হয়ে উঠেছিল কি না, এ বার তার তদন্ত শুরু করবে সিবিআই। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি ও কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের কোম্পানি নিবন্ধকের হাতেই সারদার মতো অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির কাজকারবারে নজরদারির দায়িত্ব থাকে। কিন্তু দিনের পর দিন সারদা প্রতারণা চালিয়ে গেলেও, তাতে সকলেই কেন চোখ বুজে ছিল, এ বার সেই প্রশ্নেরও উত্তর খুঁজবে সিবিআই।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৪৪
Share:

সারদা কেলেঙ্কারিতে রক্ষকরাও ভক্ষক হয়ে উঠেছিল কি না, এ বার তার তদন্ত শুরু করবে সিবিআই। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি ও কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের কোম্পানি নিবন্ধকের হাতেই সারদার মতো অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির কাজকারবারে নজরদারির দায়িত্ব থাকে। কিন্তু দিনের পর দিন সারদা প্রতারণা চালিয়ে গেলেও, তাতে সকলেই কেন চোখ বুজে ছিল, এ বার সেই প্রশ্নেরও উত্তর খুঁজবে সিবিআই। সেবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, কোম্পানি নিবন্ধকের কর্তাদের সঙ্গে সুদীপ্ত সেন ও সারদা গোষ্ঠীর আঁতাঁত ছিল কি না, খতিয়ে দেখবে সে সব। সিবিআই-প্রধান রঞ্জিৎ সিন্হার কথায়, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে আমরা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির ভূমিকাও খতিয়ে দেখব। সারদার বেআইনি কাজকারবারের সঙ্গে এদের যোগাযোগ ছিল কি না, তা দেখা হবে।”

Advertisement

সিবিআইয়ের প্রাথমিক তদন্তে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এক জন অবসরপ্রাপ্ত কর্তা, কোম্পানি নিবন্ধকের এক জন এবং সেবি-র তিন জন কর্তার নাম উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে, প্রায় দু’বছর ধরে তাঁদের প্রতি মাসে ৭০ লক্ষ টাকা দিয়েছেন সুদীপ্ত সেন। এটা হয়েছে এক জন ‘মিডলম্যান’-এর মাধ্যমে। রাজ্য পুলিশের থেকে পাওয়া নথিপত্র ও সারদার নানা সংস্থায় তল্লাশি চালিয়ে সিবিআই যে সব তথ্য পেয়েছে, তাতে জানা গিয়েছে, কেউ কেউ ৪ বছর ধরেও টাকা নিয়েছেন।

সিবিআইকে লেখা চিঠিতে সুদীপ্ত নিজেই জানিয়েছিলেন, তিনি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কর্মকর্তা দেবব্রত সরকার ওরফে নিতুর মাধ্যমে সেবি-র সঙ্গে আঁতাঁত তৈরির চেষ্টা করেছিলেন। দেবব্রত সুদীপ্তকে জানিয়েছিলেন, সেবি-র এক শীর্ষকর্তার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার সুবাদে তিনি সুদীপ্তর সংস্থাকে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র জোগাড় করে দিতে সাহায্য করবেন। সুদীপ্তর দাবি, দেবব্রতকে তিনি প্রায় ৪০ কোটি টাকা দিয়েছিলেন।

Advertisement

সিবিআই-কর্তারা বলছেন, সুপ্রিম কোর্টে সারদা নিয়ে সিবিআই মামলা চলাকালীন বারবার অবস্থান পাল্টেছে সেবি-র। এক বার সেবি বোঝানোর চেষ্টা করেছে, সারদা আসলে একটি চিট ফান্ড। আর চিট ফান্ডের উপর নজরদারির কাজ সেবি-র নয়। কিন্তু নথিপত্র বলছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফেই সেবি-কে সারদার কাজকর্ম সম্পর্কে জানানো হয়েছিল। সেবি সারদা-র বিরুদ্ধে পদক্ষেপও করেছিল। স্বাভাবিক ভাবেই সেবি-র কাজকর্ম নিয়ে সন্দেহ থেকে যাচ্ছে।

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এক উচ্চপদস্থ কর্তার সঙ্গেও সুদীপ্তর আঁতাঁত ছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। অবসর নেওয়ার আগে ওই ব্যক্তি গোটা পূর্বাঞ্চলের দায়িত্বে ছিলেন। রাজ্য পুলিশ তদন্তে নেমে ওই ব্যক্তির বিবৃতিও নথিভুক্ত করেছিল। কিন্তু তার পরে পুলিশ আর এগোয়নি। সিবিআই কর্তারা মনে করছেন, ওই অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক-কর্তাকে জেরা করে অনেক তথ্য মিলতে পারে। কোম্পানি নিবন্ধক ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে ভাবে সারদা-কাণ্ডে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে তাতে এই দুই সংস্থার কর্তাদের হাত থাকার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement