শান্তিপ্রসাদ সিন্হা (বাঁ-দিক থেকে মাঝে) এবং অশোক সাহা। —নিজস্ব চিত্র।
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বুধবারই এসএসসি উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হা এবং অশোক সাহাকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। বৃহস্পতিবার এই দু’জনকে আলিপুরের সিবিআই আদালতে পেশ করা হলে সিবিআইয়ের তরফে আদালতের কাছে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। আদালত সিবিআইয়ের এই আবেদন মঞ্জুর করেছে। আদালতে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, স্কুলে নিয়োগের ক্ষেত্রে 'বৃহত্তর ষড়যন্ত্র' হয়েছে। অনেক প্রভাবশালী এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বলেও জানান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আদালতে সিবিআইয়ের আইনজীবী শান্তিপ্রসাদ এবং অশোককে হেফাজতে নেওয়ার জন্য সওয়াল করে জানান, নিয়ম মেনে কোনও নিয়োগ হয়নি।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে আদালতে জানানো হয়, তথ্যের অধিকার আইন (RTI)-কে হাতিয়ার করে শূন্যপদের সংখ্যা জেনে, সেই মতো নিয়োগ করা হত। গোটা প্রক্রিয়ার মধ্যে স্বচ্ছতা ছিল না বলেও দাবি করা হয়েছে সিবিআইয়ের তরফে। বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের সঙ্গে কারা কারা জড়িত, তা জানতে এই দু’জনকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলে জানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আদালতের নির্দেশে দু'জনেরই ১৭ অগস্ট অবধি পুলিশি হেফাজত হয়েছে।
এই সংক্রান্ত মামলায় সিবিআই যে এফআইআর দায়ের করেছিল তাতে প্রথম নামই ছিল শান্তিপ্রসাদের। অশোকের নাম ছিল চতুর্থ স্থানে। সিবিআই সূত্রে জানা যায়, জিজ্ঞাসাবাদে অসঙ্গতি মেলার পরই বুধবার তাঁদের দু’জনকে গ্রেফতার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হাই কোর্ট নিযুক্ত বাগ কমিটির রিপোর্টেও এসএসসির প্রাক্তন আহ্বায়ক শান্তিপ্রসাদ এবং এসএসসির প্রাক্তন সচিব অশোকের নাম ছিল। সিবিআই সূত্রে খবর, এই দু’জন তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। তথ্য গোপন করছিলেন।
পাল্টা শান্তিপ্রসাদের আইনজীবী শুভদীপ ঘোষ আদালতকে জানান, তাঁর মক্কেলের বয়স সত্তর। তিনি নিজে কিছু করেননি। অধস্তন কর্মচারা হিসাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পালন করেছেন মাত্র। তাই তার বয়সের দিকটি মাথায় রেখে তাঁকে জামিন দেওয়ার আবেদন জানান আইনজীবী। সিবিআই ডাকলে শান্তিপ্রসাদ তদন্তে সব রকম সাহায্য করতেও প্রস্তুত বলেও জানান তাঁর আইনজীবী।
এর আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ‘এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট’ (ইডি) গ্রেফতার করেছে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। ইডির তল্লাশিতে টালিগঞ্জ ও বেলঘরিয়ার অর্পিতার দুটি ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা নগদ উদ্ধার হয়। পাওয়া যায় সোনাদানাও। এছাড়াও একাধিক নথি থেকে পার্থ-অর্পিতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বহু সম্পত্তির হদিস পান তদন্তকারীরা।