বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল চিত্র।
গরু পাচার কাণ্ডের তদন্তে বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যার গাড়িচালকের নামে বিপুল জমির হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করল সিবিআই। ওই জমির সঙ্গে মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত, অনুব্রতের দেহরক্ষী সেহগাল হোসেনের যোগ রয়েছে বলেও দাবি করেছে তদন্তকারী সংস্থা। শুক্রবার আসানসোল আদালতে এই সংক্রান্ত নথি পেশ করে সিবিআই। ওই গাড়িচালক, তুফান মির্ধার সঙ্গে শনিবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
সিবিআই ও স্থানীয় সূত্রে খবর, তুফান বোলপুর কালিকাপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অনুব্রতের মেয়ের গাড়ি চালিয়ে আসছেন। অনুব্রত ও সেহগালের সঙ্গে তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ সম্পর্ক ছিল বলে দাবি সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের। এ বার তাঁর নামেই জমির খোঁজ পেলেন তদন্তকারীরা। সিবিআই সূত্রে দাবি, গরু পাচারের টাকা বিভিন্ন দিকে আদানপ্রদানে জড়িত ছিলেন সেহগাল। তাই এই জমি কেনার ক্ষেত্রে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা থাকতে পারে মনে করছে সিবিআই।
গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই তাঁর ও তাঁর একাধিক সহযোগীর নামে বিপুল সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে বলে দাবি করে এসেছে সিবিআই। কয়েক মাস আগে ভোলেবোম চালকলে সিবিআই হানার দিনেও স্থানীয় এক বাসিন্দার দেওয়া চিরকুটে এই তুফান মির্ধার নাম উঠে এসেছিল। মাসখানেক আগে তুফানকে তলবও করেছিল সিবিআই।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে, শান্তিনিকেতন থানার অন্তর্গত কঙ্কালীতলা পঞ্চায়েত এলাকায় পাথরঘাটা মৌজায় তুফান মির্ধার নামে ৮৫ শতক অর্থাৎ প্রায় ৫২ কাঠা জমি রয়েছে। ওই জমি অনুব্রত গ্রেফতারের মাস আড়াই আগে, ২০২২-এর মে মাসে তুফান মির্ধার নামে রেকর্ড করা হয়েছে বলে সরকারি তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। ওই এলাকার বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী ওই জমির দাম দু’কোটিরও বেশি। বিরোধীদের প্রশ্ন, এক জন গাড়িচালকের আয়ে কি ওই বিপুল পরিমাণ জমি কেনা সম্ভব?
সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “এটা আজ সবার কাছে পরিষ্কার যে, কালো টাকাকে সাদা করতে একাধিক পন্থা নেওয়া হয়েছিল। নামে-বেনামে প্রচুর সম্পত্তি কেনা হয়েছিল। আমরা চাই, এই সমস্ত কিছুর তদন্ত হোক।”
বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন, “বাড়ির পরিচারক থেকে শুরু করে তাঁর (অনুব্রতের) ঘনিষ্ঠ হেন কোনও লোক নেই, যার নামে তিনি (অনুব্রত) সম্পত্তি রাখেননি। সঠিক তদন্ত করা হলে আরও অনেক কিছু বেরোবে।” এ নিয়ে তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।