নিমিশা প্রিয়া। — ফাইল চিত্র।
সোমবার ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ডের রায়ে সিলমোহর দিয়েছেন ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট রাশাদ আল-আলিমি। সেই থেকে আলোচনার কেন্দ্রে ইয়েমেন অভিবাসী কেরলের তরুণী। এক মাসের মধ্যে নিমিশার সাজা কার্যকর হতে পারে বলে জানিয়েছে সে দেশের আদালত। সেই আবহেই এ বার মেয়ের প্রাণ বাঁচাতে আর্জি জানালেন নিমিশার মা।
মঙ্গলবার ইয়েমেন থেকে নিমিশার মা প্রেমা কুমারী হাতজোড় করে বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত সব রকমের সাহায্য করার জন্য ভারত ও কেরল সরকারের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তা-ও শেষ বারের মতো অনুরোধ করছি, কিছু করুন। ওকে বাঁচান। সময় ফুরিয়ে আসছে, দয়া করে ওকে বাঁচান। এটাই আমার শেষ আবেদন।’’ নিমিশার ঘটনায় মঙ্গলবার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকও। জানানো হয়েছে, সরকারের তরফে এ বিষয়ে যথাসাধ্য সাহায্য করা হবে।
মেয়ের মুক্তির জন্য গত কয়েক বছর ধরে সব রকম চেষ্টা করছেন নিমিশার মা। সাহায্য করছে বিদেশ মন্ত্রকও। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে আইনজীবীর ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। খুনের দায়ে অভিযুক্ত নিমিশার মুক্তির দাবিতে ইয়েমেন অভিবাসী ভারতীয়দের একাংশ মিলে খুলেছেন ‘সেভ নিমিশা প্রিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকশন কাউন্সিল’। তারাও নিমিশার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে বিদেশে ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়েও। মেয়ের মুক্তির জন্য নিহতের পরিবারকে দিতে হবে মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ। সে জন্য চলতি বছরেই জমিবাড়ি বিক্রি করে ইয়েমেনে চলে গিয়েছেন প্রৌঢ়া মা। কিন্তু লাভ হয়নি। ক্ষতিপূরণ নয়, নিমিশার শাস্তিই চেয়েছেন নিহতের পরিবার।
কেরলের পালাক্কড় জেলার বাসিন্দা নিমিশা পেশায় নার্স। ২০১৭ সালে ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আব্দো মাহদি নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে ইয়েমেনের আদালত। মৃত্যুদণ্ডের সাজা হয় তাঁর। এই সাত বছরে পরিবারের তরফে ৩৬ বছর বয়সি নিমিশাকে বাঁচানোর সব রকম চেষ্টা করা হয়েছে। শেষ চেষ্টা হিসাবে ‘দিয়া’ (নিহতের পরিবারের নির্ধারিত ক্ষতিপূরণের অঙ্ক) দিয়েও মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন নিমিশার মা। কিন্তু কিছুতেই চিঁড়ে ভেজেনি। গত বছর নিমিশার সাজা মকুবের শেষ আবেদনও খারিজ হয়ে গিয়েছে সে দেশের সুপ্রিম কোর্টে। এ বার প্রেসিডেন্টের সিলমোহরের পর শেষ আর্জি জানালেন নিমিশার মা।