ক্যাডার বিধির নিয়মকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হল। ছবি: সংগৃহীত।
তিন আইপিএস অফিসারের বদলি নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত তৈরি হলে মোদী সরকার যুক্তি দিয়েছিল, আইপিএস ক্যাডার বিধি অনুযায়ী, এ বিষয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এ বার সেই ক্যাডার বিধির নিয়মকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হল। এই বিধিনিয়মকে খারিজ করে দেওয়ার দাবি জানিয়ে মামলায় যুক্তি দেওয়া হয়েছে, এই নিয়ম
সংবিধানের বিরোধী।
গত ডিসেম্বরে বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডার কনভয়ে হামলার পরে কেন্দ্রীয় সরকার তিন আইপিএস অফিসারকে কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে নিতে চেয়ে নবান্নে চিঠি পাঠিয়েছিল। ঘটনার দিন নড্ডার কনভয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন আইজি (দক্ষিণবঙ্গ) রাজীব মিশ্র, ডিআইজি (প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ) প্রবীণ কুমার ত্রিপাঠী ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে। অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তাঁদের কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে নিতে চাইলেও রাজ্য বেঁকে বসে। সে সময়ই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক যুক্তি দেয়, ১৯৫৪-র আইপিএস (ক্যাডার) বিধির ৬(১) ধারা অনুযায়ী সর্বভারতীয় ক্যাডারের অফিসারদের নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে মতানৈক্য থাকলে কেন্দ্রের ইচ্ছা বা সিদ্ধান্তই মানতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টে কলকাতার আইনজীবী আবু সোহেল এই বিধিকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা করেছেন। তিন আইপিএস-কে বদলি করা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশের বিরুদ্ধে এক সময় রাজ্য প্রশাসন সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করার কথা ভেবেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। সুপ্রিম কোর্টে মামলাকারী আবু সোহেল পেশায় আইনজীবী হলেও তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের সাধারণ সম্পাদক। তাঁর অবশ্য দাবি, এই মামলার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।
শীর্ষ আদালতে দায়ের করা জনস্বার্থ মামলায় যুক্তি দেওয়া হয়েছে, সংবিধান প্রণেতারা যে কেন্দ্র-রাজ্য ঐক্যের কথা বলেছিলেন, আইপিএস (ক্যাডার) বিধির ৬(১) ধারার বক্তব্য তার বিরোধী। এর ফলে বারবার কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে সংঘাত বাঁধছে। ২০০১-এ কেন্দ্রীয় সরকার বনাম তামিলনাড়ু সরকারের সংঘাত বেঁধেছিল।
কেন্দ্র তিন আইপিএস অফিসারকে কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে ডেকে পাঠিয়েছিল। তার পরেও বারবার এমন নজির দেখা গিয়েছে। সম্প্রতি রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত পশ্চিমবঙ্গের তিন আইপিএস-কে ডেকে পাঠানো নিয়েও একই প্রশ্ন সামনে এসেছে।