police

SIM box: সিপ ট্রাঙ্ক ফোন চক্রে রাজস্ব ফাঁকি, জালে ২

বিদেশ থেকে আসা ফোন কলকে ‘সিম বক্স’ প্রযুক্তির মাধ্যমে স্থানীয় নম্বরে পরিণত করে রাজস্ব ফাঁকির চক্র ধরা পড়েছে কিছু দিন আগে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২১ ০৫:০০
Share:

জিশাদ একে এবং মহম্মদ রিয়াজ

বিদেশ থেকে আসা ফোন কলকে ‘সিম বক্স’ প্রযুক্তির মাধ্যমে স্থানীয় নম্বরে পরিণত করে রাজস্ব ফাঁকির চক্র ধরা পড়েছে কিছু দিন আগে। এ বার ইন্টারনেট কলকে ‘সেশন ইনিশিয়েশন প্রোটোকল’ বা ‘সিপ ট্রাঙ্ক’ প্রযুক্তিতে স্থানীয় কলে পরিণত করে অবৈধ ফোন এক্সচেঞ্জ চালিয়ে রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ উঠল। এই অভিযোগে বুধবার রাতে জিশাদ একে এবং মহম্মদ রিয়াজ নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স বা এসটিএফ। ধৃতদের বাড়ি কেরলের কোঝিকোড়ে।

Advertisement

‘সিপ ট্রাঙ্ক’ প্রযুক্তি ব্যবহারের জেরে সরকারের প্রচুর টাকা লোকসান তো হয়ই, উপরন্তু কোথায় ওই কল ব্যবহার করা হচ্ছে, নজরদারিতে তা ধরা পড়ে না। কোন নম্বর থেকে কল এসেছিল, তার প্রমাণ থাকে না কোথাও। প্রযুক্তিগত এই সুযোগ-সুবিধা নিয়ে জঙ্গি বা অন্য দুষ্কৃতী চক্র নিজেদের মধ্যে যোগাযোগও রাখতে পারে বলে গোয়েন্দাদের সন্দেহ।

গোয়েন্দারা জানান, জিশাদকে আসানসোলের পালপাড়া এবং রিয়াজকে বাঁকুড়ার বড়জোড়া থানা এলাকার ওয়েবেল আইটি পার্ক থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, জিশাদ ৭১৯টি এবং রিয়াজ ১২০০টি অবৈধ চ্যানেলে সিপ ট্রাঙ্ক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছিল। দেড় বছর ধরে তারা ওখানে বসে ওই কাজ করছিল। তাদের কাছ থেকে প্রচুর যন্ত্রাংশ বাজেয়াপ্ত করা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার জিশাদকে আসানসোলের সিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক তরুণকুমার মণ্ডল তাকে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। রিয়াজকে তোলা হয় বাঁকুড়া আদালতে। তাকে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, “তদন্ত চলছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

Advertisement

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ও আসানসোল থেকে বেশ কিছু গ্রাহক নিয়মিত বিদেশে ফোন করছিলেন, কিন্তু কোনও ভাবেই সেগুলি আন্তর্জাতিক কল হচ্ছিল না। টেলিকম দফতর সেটা বুঝতে পারছিল। এসটিএফের তরফে যোগাযোগ করা হয় টেলিকম দফতরের সঙ্গে। তার পরেই হানা দিয়ে ওই দুই অভিযুক্তকে পাকড়াও করেন গোয়েন্দারা।

ধৃতদের জেরা করার পরে গোয়েন্দাদের দাবি, ভুয়ো নথি দিয়ে বিভিন্ন মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার কাছ থেকে চ্যানেল কিনে তা ব্যবহার করত অভিযুক্তেরা। সেই জন্য আইটি পার্কে অফিসও ভাড়া নিয়েছিল তারা। অভিযানের নেতৃত্বে থাকা বেঙ্গল এসটিএফের আধিকারিক রিকি তামাং আদালতে জানান, আসানসোল উত্তর থানার সুগম পার্কের লাগোয়া পালপাড়া, ওয়েবেল আইটি পার্ক সংলগ্ন অঞ্চল ও আটা কলোনি এলাকায় কয়েক জনকে নিয়ে অবৈধ ফোন এক্সচেঞ্জ চালাচ্ছিল জিশাদ।

এর আগে বঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় থেকে সিম বক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে বেআইনি টেলিফোন এক্সচেঞ্জ চালানোর অভিযোগ পেয়ে একাধিক বাংলাদেশি-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছিল এসটিএফ। গোয়েন্দারা জানান, জিশাদেরা সিম বক্স পদ্ধতির থেকেও উন্নত সিপ ট্রাঙ্ক প্রযুক্তিতে ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল (ভিওআইপি) বা ইন্টারনেট কলকে স্থানীয় কলে পরিণত করত। সিপ ট্রাঙ্কে একাধিক চ্যানেল থাকে। মূলত সৌদি আরব, কাতার, লেবানন, বাহরিন-সহ পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ইন্টারনেট কল এই প্রযুক্তিতে স্থানীয় নম্বরে পরিবর্তন করা হত। এতে সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন টেলিকম পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার ক্ষতি হচ্ছিল বলে জানান গোয়েন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement