লাঠি হাতে সমর্থকদের শান্ত করার চেষ্টা মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যের মন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতীয় সড়ক অবরোধ। আর তাতেই আটকে পড়ল করোনার টিকাবাহী গাড়ি। বুধবার এই ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের গলসিতে।
টিকা নিয়ে বাঁকুড়া যাচ্ছিল একটি গাড়ি। সেই সময় কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইনের প্রতিবাদে রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর নেতৃত্বে রাস্তা আটকে চলছিল বিক্ষোভ। আর তাতেই থমকে যায় বাঁকুড়াগামী ওই গাড়িটি। শেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে ওই গাড়িটির পথ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। এমন ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়েছেন সিদ্দিকুল্লা। যদিও মন্ত্রীর ব্যাখ্যা, এমন ঘটনা ‘অনিচ্ছাকৃত’।
বুধবার কলকাতা থেকে বর্ধমান হয়ে বাঁকুড়া রওনা দিয়েছিল টীকাবাহী গাড়িটি। কিন্তু গলসির গলিগ্রামে নয়া কৃষি আইনের প্রতিবাদে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধে নামে সিদ্দিকুল্লার জমিয়তে উলেমা এ হিন্দের কর্মী, সমর্থকরা। কর্মসূচিতে যোগ দেন শিখ সম্প্রদায়ের অনেকে। ঘণ্টা তিনেকের অবরোধে জাতীয় সড়কের দুই লেনেই আটকে পড়ে দুশো থেকে আড়াইশো গাড়ি। সেগুলির পিছনে আটকে পড়ে টিকাবাহী গাড়িটিও।
আরও পড়ুন: চেনটা ছিঁড়ে গেল, বকলসটা এখনও গলায় আটকে, বলছেন শিশির
আরও পড়ুন: আপাতত দল বড় করে পরে ছাঁকনি, নীলবাড়ির লক্ষ্যে এখন দিলীপ-নীতি
ভ্যাক্সিনের গাড়ি আটকে পড়ার খবর পেয়ে ময়দানে নামেন সিদ্দিকুল্লা স্বয়ং। লাঠি হাতে ‘বিশৃঙ্খলা’ সামলানোর চেষ্টা করেন মন্ত্রী। রাস্তা অবরোধ করতেও নিষেধ করেন। কিন্তু তাঁর ‘সাবধানবাণী’র তোয়াক্কা না করেই জাতীয় সড়কে বসে পড়েন সিদ্দিকুল্লার দলের কর্মী, সমর্থকরা। তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। শেষ পর্যন্ত পুলিশের হস্তক্ষেপে টিকাবাহী গাড়িটিকে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার ঘুরিয়ে জাতীয় সড়কে তুলে দেওয়া হয়। ফের বাঁকুড়ার পথে রওনা দেয় গাড়িটি।
এমন ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েন সিদ্দিকুল্লা। যদিও তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘আপনারা নিজের চোখেই দেখেছেন, আমি নিজে নেমে চেষ্টা করেছিলাম মিছিল আটকাতে। কিন্তু ততক্ষণে পুলিশ গাড়িটিকে বের করিয়ে দেয়। এটা আমাদের অনিচ্ছাকৃত দেরি নয়।’’ তবে তাঁর মত, ‘‘৯৫ কোটি মানুষের রুজিরুটি, জীবনমরণের লড়াইয়ের কাছে ওই ভ্যাক্সিন অত মূল্যবান নয়।’’
মঙ্গলবার রাজ্যে কোভিশিল্ড এসে পৌঁছনোর পর, তা পাঠানো হয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলায়। সেখানে টিকাকরণ শুরু হতে চলেছে ১৬ জানুয়ারি থেকে। এ কথা জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায়। তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রথম দিন টিকা দেওয়া হবে জেলার ১৩ টি কেন্দ্রে। দৈনিক ১০০ জনকে টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। জেলায় প্রথম দফায় ৩১ হাজার ৫০০ জনকে টিকা দেওয়া হবে বলেও তথ্য দিয়েছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।
বুধবার কোভিশিল্ড পৌঁছেছে বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদেও। বীরভূম জেলা এবং রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার জন্য পাঠানো হয়েছে মোট সাড়ে ১১ হাজার টিকা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এ দিন সাড়ে ৩৭ হাজার টিকা পাঠানো হয়েছে মুর্শিদাবাদের।