ছবি: সংগৃহীত।
ডেউচা-পাঁচামির কয়লা খনি উত্তোলনের এলাকায় বাসিন্দাদের জমির দলিল তৈরির কাজ শুরু করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। ভূমি দফতর ডেউচা এলাকায় শিবির করে সমস্ত বাসিন্দাদের জমির কাগজপত্র ঠিক করে দেবে। প্রয়োজনমতো রেকর্ড সংশোধন হবে। দেওয়া হবে জমির মালিকানার কাগজপত্রও।
মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘ভূমি সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিঙ্গুরে জমির রেকর্ড না থাকায় সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়েছিল। এখানে সেই সমস্যা এড়িয়ে জনজাতি ও সাধারণ বাসিন্দাদের জমির কাগজ তৈরি করে দেওয়া হবে।’’
সরকারি সূত্রের দাবি, জমির মালিকানা স্পষ্ট হলে ক্ষতিপূরণ দিতে সুবিধা হবে। সিঙ্গুরে এক হাজার একর জমির ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য ১৩ হাজার চেক বিলি হয়েছিল। ডেউচাতে যাতে একই ঘটনা না ঘটে তা নিয়ে সতর্ক সরকার।
মুখ্যসচিব জানান, গ্রামবাসীদের সঙ্গে বৈঠকে স্পষ্ট বলা হয়েছে সরকার ক্ষতিপূরণের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। এখন যাঁর যা রয়েছে, ক্ষতিপূরণ হিসেবেও তাঁদের তাই দেওয়া হবে। জমির বদলে জমি, বাড়ির বদলে বাড়ি, কাজের বদলে কাজ। তবে সরকারি চাকরির কোনও নিশ্চয়তা নবান্ন দিতে পারবে না বলে মুখ্যসচিব গ্রামবাসীদের জানিয়েছেন। ব্যক্তিগত ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি সরকার সামাজিক ক্ষতিপূরণের বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করবে।
মুখ্যসচিব জানান, প্রাথমিকভাবে ওই এলাকায় ৪০টি স্থানে বোরিং করে ঠিক কত নীচে কয়লা আছে তা ঠিক করা হবে। এর পর বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম ঠিক করবে প্রথম কোন স্থান থেকে কয়লা তোলা হবে। তা নির্দিষ্ট হলে সেখানকার ৩০০-৪০০ একর জমি নিয়ে প্রথম কয়লা তোলা হবে। ধাপে ধাপে অন্যত্র সেই কাজ চলবে। পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা ধরে কয়লা উত্তোলনের কাজ করতে অন্তত ৪০-৫০ বছর লেগে যাবে বলেও মুখ্যসচিব জানান।
এ দিকে মহম্মদবাজারের প্রস্তাবিত কয়লা খনি প্রকল্প নিয়ে এলাকার মানুষের সঙ্গে মুখ্যসচিবের বৈঠকের চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই মাঠে নামল শাসকদল। বৃহস্পতিবার মুখ্যসচিব সরকারের তরফে যে বার্তা দিয়ে গিয়েছিলেন, শুক্রবার সকাল থেকে গ্রামে গ্রামে গিয়ে তা প্রচার করছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। তাঁদের বার্তা, ‘কাউকে বঞ্চিত করে বা কারও ক্ষতি করে নয়, একশো শতাংশ পুনর্বাসন করে তবেই কয়লা খনির কাজে হাত দেবে সরকার।’ প্রস্তাবিত খনি এলাকায় থাকা হিংলো গ্রাম পঞ্চায়েতের দেওয়ানগঞ্জ, হরিণশিঙা, নিশ্চিন্তপুর ও জগতপুর গ্রামে সকালে-বিকালে প্রচার চলেছে। গ্রামের মানুষের কাছে ইতিবাচক বার্তা দিতে যান উপপ্রধান শিবদাস দাস এবং প্রতিটি সংসদের নির্বাচিত গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যরা।