সব কর্মী সংগঠনকে এক ছাতার তলায় এসে মঞ্চ তৈরির আহ্বান জানিয়েছে কর্মচারী পরিষদ নামে বিজেপি প্রভাবিত একটি কর্মী সংগঠন। ফাইল ছবি
মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) মামলায় একাধিক বার জয়ের স্বাদ পেয়েছেন সরকারি কর্মচারীরা। কিন্তু ডিএ পাননি। ডিএ মেটানোর রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে, আঁচ করে কোমর বেঁধেছে কর্মী সংগঠনগুলি। এই পরিস্থিতিতে সব কর্মী সংগঠনকে এক ছাতার তলায় এসে মঞ্চ তৈরির আহ্বান জানিয়েছে কর্মচারী পরিষদ নামে বিজেপি প্রভাবিত একটি কর্মী সংগঠন। কিন্তু সেই ডাকে সাড়া দেয়নি কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি অনুমোদিত ‘কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ়’। বরং তারা সরাসরি এই প্রস্তাব খারিজ করেছে। এই দুটি সংগঠন ছাড়াও ডিএ মামলায় ‘ইউনিটি ফোরাম’ নামে একটি কর্মী সংগঠনও যুক্ত। তারা আপত্তি করেনি।
২০১৬ সাল থেকে ডিএ-র দাবিতে আইনি লড়াই লড়ছে কনফেডারেশন। ২০২২ সালে কর্মচারী পরিষদ মামলায় যুক্ত হয়। প্রায় একই সময়ে ইউনিটি ফোরামও যুক্ত হয়েছে। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে সরকারি কর্মীরাই কনফেডারেশনকে অর্থবল জুগিয়েছেন বলে সংগঠনের নেতারা জানান। লড়াই এ বার সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ায় আরও অর্থের প্রয়োজন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই যুক্তিকে সামনে রেখেই কর্মচারী পরিষদের আবেদন, পৃথক ভাবে লড়াইয়ের বদলে একক মঞ্চ তৈরি করে তা চালানো হোক। সংগঠনের সভাপতি দেবাশীষ শীলের বক্তব্য, “দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে কর্মীদের স্বার্থে একক ভাবে লড়াই হোক। তাতে হাত আরও শক্ত হবে। ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘও সিটু বা আইএনটিইউসি-র সঙ্গে আন্দোলন করেছে। সেই উদাহরণ আমাদের সামনেই রয়েছে।”
কনফেডারেশন-এর সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যারের কথায়, “মামলা কখনও যৌথ ভাবে লড়া যায় না। তা একক ভাবেই লড়তে হয়। এ ক্ষেত্রে অন্য সংগঠন সেই মামলায় যুক্ত হতে পারে। তবে এক মঞ্চ হয় না।” তবে ইউনিটি ফোরাম-এর আহ্বায়ক দেবপ্রসাদ হালদারের কথায়, “অতীতে যখন আমাদের সভায় ডাকা হয়েছে, তখন থেকেছি। পরিষদের সঙ্গে রয়েছি। যৌথ আন্দোলনের স্বার্থে আমরা সবসময় আছি।”
ডিএ-র দাবিতে মূল মামলাকারী কনফেডারেশনের বক্তব্য, রাজনৈতিক রং এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করতে তারা নারাজ। তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রে বিজেপি সরকার মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। আবার বিজেপির শাসনে থাকা ত্রিপুরায় সরকারি কর্মচারীরা ৩০% ডিএ কম পাচ্ছেন। তা ছাড়া, একটা সময় তৃণমূলে থাকা কর্মচারী নেতাদের অনেকে এখন কর্মচারী পরিষদে যুক্ত। তাই বিজেপি প্রভাবিত পরিষদের আবেদনে সাড়া দিলে বেশির ভাগ কর্মী ভাল ভাবে নেবেন না। কনফেডারেশন-এর সভাপতি শ্যামলকুমার মিত্রের মন্তব্য, “দলীয় রাজনীতির বাইরে থাকা কোনও সংগঠনের সঙ্গে কর্মীদের স্বার্থে কাজ করতে অসুবিধা নেই।”