প্রতীকী ছবি। প্রতীকী ছবি।
দিল্লি থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সব রাজ্যকেই। যে-সব প্রতিবন্ধী বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি এখনও খাদ্য সুরক্ষা আইনের ছাতার বাইরে থেকে গিয়েছেন, তাঁদের গণবণ্টন ব্যবস্থার আওতায় আনার প্রক্রিয়ায় গতি আনতে অগস্টে মুখ্যসচিবদের ব্যক্তিগত ভাবে হস্তক্ষেপেরও অনুরোধ জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রক। কিন্তু তাতেও বিভিন্ন রাজ্য সে-ভাবে তৎপর না-হওয়ায় এ বার এই বিষয়ে রিপোর্ট চেয়ে পাঠাল কেন্দ্র।
জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের পরিধি বাড়ানো হচ্ছে। তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই এই আইনের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে প্রতিবন্ধীদের। এই নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন এসেছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লি হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। এই বিষয়ে পদক্ষেপ করতে সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে নির্দেশ দিয়েছে তারা। তা বাস্তবায়িত করতে পদক্ষেপ করছে বিভিন্ন রাজ্য। ব্যতিক্রম নয় পশ্চিমবঙ্গও। সব জেলাকে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করার
নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ দফতর। খাদ্য সুরক্ষা আইন ২০১৩-এর ৩৮ নম্বর ধারা অনুসারে প্রতিবন্ধীরা ওই আইনের অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছেন বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। খাদ্য ও গণবণ্টন এবং ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রক দিন চারেক আগে তাঁদের অন্তর্ভুক্তির স্টেটাস রিপোর্ট পাঠাতে বলেছে সব রাজ্যকে।
বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের তালিকা থেকে তাঁদের সুবিধা-অসুবিধা দেখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সমাজকল্যাণ দফতর। আর গণবণ্টন ব্যবস্থা রয়েছে খাদ্য দফতরের আওতায়। কাজটা সহজ করতে ওই দুই দফতরকে নিয়ে বৈঠক করার জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক’জন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি খাদ্য সুরক্ষা আইনের বাইরে আছেন, জেলার সমাজকল্যাণ ও খাদ্য দফতর সেটা দেখবে। কারণ, আলাদা ভাবে চিহ্নিত করে আগে বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের তালিকা তৈরি না-হলেও তাঁদের অনেকে খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় আছেন। তাই দু’টি আলাদা তালিকা তৈরির পরামর্শ দিয়েছে খাদ্য দফতর। যে-সব প্রতিবন্ধী এই আইনের বাইরে আছেন, তাঁদের অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া দ্রুত করার জন্য খাদ্য দফতর সপ্তাহখানেক আগে জেলাগুলির কাছে নির্দেশ পাঠিয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কর্মরত সামাজিক সংগঠনেরও মতামত নিতে পারেন জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা। এই আইনের আওতায় আসার জন্য বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের আবেদনপত্র জমা নিতে এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে হবে বলে জেলা প্রশাসনকে মনে করিয়ে দিয়েছে খাদ্য দফতর। কতটা কী করা হল, তার সবিস্তার রিপোর্ট পাঠাবে জেলাগুলি। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে বৈঠক শুরু করেছে বিভিন্ন জেলা প্রশাসন।
সামগ্রিক ভাবে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশন। ‘‘আমরা চাই, সকলেই খাদ্যসামগ্রী পান। যত বেশি মানুষ খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় আসবেন, সমাজের পক্ষে ততই ভাল,’’ বলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু।