স্মরণ: কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১৯০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এই দেশে আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রের প্রথম মহিলা চিকিৎসক ও প্রাক্তনী কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবিতে মাল্যদান প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর। শনিবার, টাউন হলে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।
অপেক্ষা আরও ১০ বছরের। তার পরেই ২০০ বছরে পা দেবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। দেশের মধ্যে প্রথম এত পুরনো মেডিক্যাল কলেজের তালিকায় উঠবে এ রাজ্যের নাম। সেই মাহেন্দ্রক্ষণকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে এখন থেকেই সলতে পাকানো শুরু করেছেন প্রাক্তনীরা।
আজ, ২৮ জানুয়ারি ১৯০তম বর্ষে পা দেবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। তার আগে ২৭ জানুয়ারি থেকেই দ্বিশত বর্ষ উদ্যাপনের সূচনা কার্যত হয়ে গেল। সহযোগী হিসেবে রয়েছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। শনিবার রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর হাত দিয়েই ওড়ানো হল ফানুস। উপস্থিত অন্যান্য অতিথি ও চিকিৎসকেরা নীল-সাদা রঙের ১৯০টি বেলুন উড়িয়ে সূচনা করলেন প্রতিষ্ঠা দিবস উদ্যাপন এবং প্রাক্তনীদের ৮৯তম পুনর্মিলনের। ছিলেন ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনার অ্যান্ড্রু ফ্লেমিং, ব্রিটিশ কাউন্সিলের পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের অধিকর্তা দেবাঞ্জন চক্রবর্তী, কলকাতা মেডিক্যালের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস, চিকিৎসক-বিধায়ক নির্মল মাজি-সহ অন্যেরা। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি গোপালকৃষ্ণ গান্ধী বলেন, ‘‘মেডিক্যাল কলেজের কর্মকাণ্ডের যে ব্যাপ্তি, তাতে শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রতি ১০ বছর অন্তর একটি করে বই হতে পারে। তাতে যুগের সঙ্গে মেডিক্যাল কলেজের পরিবর্তনের কথা লেখা থাকবে।’’
হাসপাতালের ইতিহাস, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রের বিভিন্ন দিক নিয়ে একটি বইও প্রকাশ করা হয় এ দিন। বঙ্গের মাটিতে আধুনিক চিকিৎসার শুধু প্রথম হাসপাতালই নয় এই চিকিৎসা-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বরং চিকিৎসা-শিক্ষায় এর ভূমিকা চিরস্মরণীয়। আজও প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি পরতে ছড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস। সেগুলিকেই ১০ মিনিটের তথ্যচিত্রে তুলে ধরা হয়। ১৯০তম বর্ষে পদার্পণের অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক, চিকিৎসক অমিত ঘোষ জানান, ওই ইতিহাসকে বর্তমান প্রজন্ম ও সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতে আয়োজন করা হচ্ছে হেরিটেজ ওয়াকের।
অমিত বলেন, ‘‘সরকার কলকাতা মেডিক্যালের ঐতিহ্যকে রক্ষা করেছে। পাশাপাশি, প্রতিষ্ঠানকে আরও সমৃদ্ধ করতে বদ্ধপরিকর প্রাক্তনীরা।’’ কী ভাবে সেই পথে এগোনো সম্ভব, সে বিষয়ে আলোকপাত করতে এ দিন আয়োজন করা হয়েছিল এক আলোচনাসভার। অংশ নিয়েছিলেন জহর সরকার, ফেলিক্স রাজ, দেবাঞ্জন চক্রবর্তী, তপতী গুহঠাকুরতা, ইন্দ্রজিৎ সর্দার। অন্য দিকে, প্রাক্তন রাজ্যপালও তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হল আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই, কলকাতা মেডিক্যাল ২০০ বছরে পা দেওয়ার আগের এই ১০ বছর তা নিয়ে প্রচুর ভাবতে হবে।’’ আয়োজক কমিটির কোষাধ্যক্ষ, চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই জানান, ১৯০তম বর্ষের অনুষ্ঠান চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।
তিনি জানান, প্রবাসী ১৫০ জন-সহ যোগ দিতে আসছেন প্রায় ১৫০০ প্রাক্তনী। কৃতী চিকিৎসকদের পুরস্কৃত করার পাশাপাশি থাকবে প্রাক্তনীদের বইয়ের প্রদর্শনী। আবার, ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠিত হওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে সিনেমা ‘প্রত্যাবর্তন’। আয়োজক কমিটির সম্পাদক, চিকিৎসক অভীক ঘোষ বলেন, ‘‘অভিনয় করেছেন আমাদেরই ১০০ জন প্রাক্তনী। ৩১ জানুয়ারি মুক্তি পাবে সেটি।’’