নিজস্ব চিত্র
বয়স্ক বা প্রবীণ নাগরিকদের অধিকার রয়েছে নিজের বাড়িতে বসবাস করার। প্রয়োজনে তিনি নিজের পুত্র এবং পুত্রবধূকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করতে পারেন। শুক্রবার এক মামলার পর্যবেক্ষণে এমনটাই জানাল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালতের মতে, সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদ অনুসারে যে কোনও বয়স্ক ব্যক্তির নিজের বাড়িতে থাকার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে।
নিজের পুত্র এবং পুত্রবধূর অত্যাচারে বাড়ি ছাড়া হন নদিয়ার এক প্রবীণ ব্যক্তি। এর বিরুদ্ধে ওই ব্যক্তি কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন। শুক্রবার ওই মামলার শুনানিতে বিচারপতি রাজশেখর মান্থা বলেন, "একজন প্রবীণ নাগরিকের নিজস্ব বাড়িতে ভাল ভাবে বসবাস করার অধিকার রয়েছে। এবং তা না হলে সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদের আওতায় থাকা জীবনের মৌলিক অধিকার এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার ভঙ্গ হতে পারে।" তাঁর আরও মন্তব্য, "জীবনের সূর্যাস্তের সময় কোনও নাগরিককে আদালতে যেতে বাধ্য করা অত্যন্ত বেদনাদায়ক।"
আবেদনকারীর উপর অত্যাচারের অভিযোগে আদালত তাহেরপুর থানার অফিসার-ইন-চার্জকে নির্দেশ দেয়,বয়স্ক মানুষদের থাকা অসহনীয় হয়ে উঠলে বা অশান্তির কারণে তাঁর সুস্থতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে বাড়ি থেকে পুত্র ও পুত্রবধূকে বার করে দিন। বিচারপতি মান্থার কথায়, "যে জাতি নিজের বৃদ্ধ, অসুস্থ নাগরিকদের যত্ন নিতে পারে না, সে সম্পূর্ণ সভ্যতা অর্জন করেছে বলে গণ্য করা যায় না।"
অনেক ক্ষেত্রে শ্বশুরবাড়িতে পুত্র ও পুত্রবধূদের থাকার আইনি অধিকার থাকে। সে ক্ষেত্রে তাঁদের বার করে দেওয়া উচিত হবে কি না,তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিচারপতি অবশ্য জানান, ২০০৭ সালের প্রবীণ নাগরিক আইন অনুযায়ী, কোনও বয়স্ক ব্যক্তির তাঁর নিজের বাড়িতে বসবাসের করার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে। কিন্তু ২০০৫ সালের পারিবারিক হিংসা আইন অনুযায়ী, পুত্র ও বধূদের রক্ষা করার কথা বললেও, বাসস্থানের পক্ষে সুনির্দিষ্ট কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।