প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের দফা বৃদ্ধি করতে চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী যে আবেদন করেছিলেন, তা খারিজ হয়ে গিয়েছে। বুধবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ অধীরের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। আদালতের নির্দেশ, শনিবার এক দফাতেই রাজ্য জুড়ে পঞ্চায়েত ভোট অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের দফা বৃদ্ধি করা যাবে না।
পঞ্চায়েত ভোটের দফা বৃদ্ধি নিয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ, সুশৃঙ্খল ভাবে ভোটের আয়োজন করানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এই পরিস্থিতিতে ভোটের দফা বৃদ্ধি করার প্রয়োজন নেই। তাই অধীরের আবেদনটিরও আপাতত গুরুত্ব থাকছে না।
পঞ্চায়েত ভোটের দফা বৃদ্ধি করার আর্জি জানিয়ে সোমবার হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন বহরমপুরের সাংসদ তথা কংগ্রেস নেতা অধীর। হাই কোর্টে তাঁর আইনজীবী বেশ কয়েকটি কারণ তুলে ধরে জানিয়েছিলেন, কেন একাধিক দফায় ভোট করা জরুরি।
অধীরের আগে একই দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। আইএসএফ নেতা নওশাদের যুক্তি ছিল, হয় পঞ্চায়েত ভোটে আদালতের নির্দেশ মতো পর্যাপ্ত বাহিনী আনা হোক অথবা পঞ্চায়েত ভোটের দফা বৃদ্ধি করা হোক। রাজ্যে গত দশ বছরে জেলার সংখ্যা, ভোটার এবং বুথের সংখ্যা বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে তিনি কয়েক দফায় ভোট করানোর কথা বলেছিলেন। অধীরের আইনজীবীর যুক্তিও ছিল কিছুটা একই রকম।
অধীরের আইনজীবী মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় হাই কোর্টে বলেছিলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রতি দিনই অশান্তির ঘটনা ঘটছে। গুলি চলছে। পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী নেই। ফলে তৃণমূল স্তরে বাহিনী পৌঁছতে পারছে না। তাই যদি এই বাহিনী দিয়েই ভোট করাতে হয়, তবে একাধিক দফাতে ভোটগ্রহণ হোক।’’
পঞ্চায়েত ভোটে হাই কোর্টের নির্দেশে মোট ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে আবেদন করেছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রের তরফে প্রথম দফায় ৩৩৭ কোম্পানি এবং দ্বিতীয় দফায় আরও ৪৮৫ কোম্পানি বাহিনী পাঠানো হয়। এই বাহিনীর জওয়ানেরা ধাপে ধাপে রাজ্যে আসছেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে প্রথম থেকেই বিরোধীরা সরব হয়েছিল। পর্যাপ্ত বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে বলেই নতুন করে আর ভোটের দফা বৃদ্ধি করার আবেদন হাই কোর্টে বিবেচ্য হল না।