কলকাতা উচ্চ আদালত। ফাইল চিত্র ।
স্কুলে বদলি মামলায় সিআইডির ডিআইজি-কে তদন্ত করার দায়িত্ব দিল কলকাতা হাই কোর্ট। পাশাপাশি, উৎসশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে কী কী দুর্নীতি চলছে সেই বিষয়েও সিআইডিকে তদন্ত করার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সিআইডির ডিআইজিকে ৩০ দিনের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে হবে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের আরও নির্দেশ, এই মামলায় সিআইডির ডিআইজিকে সাহায্য করবে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ।
পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের মনসুকার লক্ষ্মীনারায়ণ হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক গণেশ রজত বদলির আবেদন করেছিলেন শিক্ষা দফতরের কাছে। গত এক বছরে তিনি পাঁচ বার বদলির আবেদন করেন। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের চালু করা ‘উৎসশ্রী’তেও তিনি আবেদন করেন। কিন্তু প্রথম দফায় স্কুল তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয়। গণেশের অভিযোগ, এক জন মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে এর পর তিনি স্কুলের পরিচালন সমিতির সদস্য অসিত গোস্বামীর সঙ্গে কথা বলেন। অসিত তাঁকে বদলি করিয়ে দেবেন বলে কথা দেন। কিন্তু বিনিময়ে ১ লক্ষ টাকা দাবি করেন। সেই অভিযোগ নিয়েই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন গণেশ।
বুধবার এই মামলা হাই কোর্টে উঠলে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে একটি অডিয়ো ক্লিপ শোনানো হয়। দাবি, ওই কথোপকথন গণেশ ও অসিতের। ওই ক্লিপে দু’টি কণ্ঠস্বর শোনা গিয়েছে। ফোনে হওয়া সেই কথোপকথন রেকর্ডে শোনা যাচ্ছে, এক জন বদলির জন্য ১ লক্ষ টাকা দাবি করছেন। তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘এর আগে যাঁরা বদলি নিয়েছেন তাঁরাও টাকা দিয়ে গিয়েছেন।’ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, ওই অডিয়োর ব্যাপারে গণেশ এবং অসিত— দু’পক্ষকেই হলফনামা জমা দিতে হবে।
আইনজীবী সুদীপ ঘোষ চৌধুরী জানান, টাকা চাওয়ার এই কথোপকথন সংক্রান্ত অডিয়ো রেকর্ড খতিয়ে দেখে এর পিছনে কারা রয়েছে তার তদন্ত করবে সিআইডি। শুধু ওই স্কুলই নয়, চাকরিতে বদলির ক্ষেত্রে বৃহত্তর চক্র কাজ করছে কি না সিআইডির ডিআইজিকে তা-ও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বিভিন্ন স্কুলে বদলি হয়ে যাওয়া শিক্ষকদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে বলেও হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে।