Darivit Case

দাড়িভিট: ২ ছাত্রের মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণের নির্দেশে স্থগিতাদেশ, পরিবারের দাবি ২০ লক্ষ

দাড়িভিটের স্কুলে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় এনআইএ তদন্ত এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। যদিও ক্ষতিপূরণের নির্দিষ্ট কোনও অঙ্ক জানায়নি সিঙ্গল বেঞ্চ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৪ ১৫:২৮
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

দাড়িভিটে গুলিতে দুই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। সেই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিল হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। বস্তুত, ক্ষতিপুরণের অঙ্ক নিয়ে আপত্তি ছিল মৃত ছাত্রদের পরিবারের। তাদের দাবি, দু’লক্ষ নয়, ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। সেই দাবি নিয়ে বুধবার প্রশ্ন তোলে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ।

Advertisement

উল্লেখ্য, দাড়িভিটের স্কুলে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় এনআইএ তদন্ত এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। যদিও ক্ষতিপূরণের নির্দিষ্ট কোনও অঙ্ক জানায়নি সিঙ্গল বেঞ্চ। অভিযোগ ওঠে হাই কোর্টের নির্দেশের পরেও পুলিশ, এনআইকে তদন্তভার তুলে দেয়নি। সেই নিয়ে দেওয়ায় আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়েছিল।

তার পরেই রাজ্য সরকার এনআইএ তদন্ত-সহ সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায়। বুধবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি ছিল। শুনানিতে রাজ্য জানায়, ইতিমধ্যেই এই মামলা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এনআইএ-কে দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিয়ম মোতাবেক, মৃত দুই ছাত্রের পরিবারকে দু’লাখ টাকাও দেওয়া হবে।

Advertisement

কিন্তু এই ক্ষতিপূরণের অঙ্ক নিয়ে আপত্তি তোলে মৃতের পরিবার। ওই দুই ছাত্রের পরিবারের তরফে দাবি করা হয়, দু’টি তাজা প্রাণ চলে গেল। সেই ঘটনার বিচারে দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ যথার্থ নয়। ২০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক। প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘ভিক্টিম কম্পেনশেসন স্কিম’ অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা। কেন ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে? সিঙ্গল বেঞ্চ তো কত টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে তা নিয়ে নির্দেশ দেয়নি। তার পরেও দুই পরিবার এত টাকা চাইছে কেন?

শুনানি শেষে হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, কেন ওই দুই পরিবার ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি করছে তা আদালতে জানাতে বলা হবে। প্রধান বিচারপতি জানান, সিঙ্গল বেঞ্চ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার যে নির্দেশ দিয়েছিল পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত তা স্থগিত থাকবে। আগামী নভেম্বরে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাড়িভিট হাই স্কুল। অবরোধ, লাঠিচার্জ, ইট-পাথর ছোড়া থেকে শুরু করে বোমা-গুলিও চলে বলে অভিযোগ। ওই সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় রাজেশ সরকার এবং তাপস বর্মণ নামে দুই প্রাক্তন ছাত্রের। এই ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবিতে তাঁদের পরিবার এবং এলাকাবাসীর একাংশের আন্দোলনে প্রায় দু’মাস ধরে বন্ধ থাকে দাড়িভিট স্কুল।

পুলিশের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ করেন স্থানীয়েরা। যদিও পুলিশ ওই অভিযোগ অস্বীকার করে। কলকাতা হাই কোর্ট প্রথমে এই ঘটনায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেয়। তবে গত বছর ১০ মে সেই মামলাতেই বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এনআইএ তদন্ত নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে আর্থিক সাহায্য দিতেও বলেছিলেন বিচারপতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement