—ফাইল চিত্র।
নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থানে বসেছিল ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য গত ২৮ বছর ধরে কাজ করে চলা সেখানকার এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। দাবি ছিল, দ্রুত এফসিআরএ (ফরেন কন্ট্রিবিউশন রেগুলেশন অ্যাক্ট)-এ তাদের রেজিস্ট্রেশন ফেরাতে হবে। অবশেষে অবস্থানে বসার তিন দিনের মাথায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ফের এফসিআরএ রেজিস্ট্রেশনের অনুমোদন দিয়েছে। এর ফলে বিদেশ থেকে অনুমোদন আসায় আর কোনও বাধা রইল না।
২০১৯ সালের অক্টোবরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সংশ্লিষ্ট সংস্থার এফসিআরএ বাতিল করেছিল। যার পর থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বিদেশ থেকে আসা অর্থ সাহায্য। তহবিলের অভাবে ধুঁকতে থাকা সংস্থা চলতি বছরের ১ জানুয়ারি বন্ধ হয়ে যায়। ‘ইউনিয়ন কার্বাইড পয়জ়ন ভিক্টিমস হেলথ কেয়ার রাইটস ফ্রন্ট’-এর সদস্যেরা ওই দিন থেকেই ভোপালে অনির্দিষ্টকালের অবস্থান শুরু করেন।
বিশ্বের বড় শিল্প বিপর্যয়গুলির অন্যতম ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনা। বেসরকারি হিসাব অনুযায়ী, ১৯৮৪ সালের ২ ডিসেম্বর মধ্যরাতে ইউনিয়ন কার্বাইড কারখানার বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে ঘটনার প্রথম সপ্তাহে মৃতের সংখ্যা আট হাজারে পৌঁছয়। তছনছ হয়েছিল প্রায় পাঁচ লক্ষ নাগরিকের জীবন। গত ডিসেম্বরের ৩ তারিখে ৪০ বছর পূর্ণ হয়েছে ওই দুর্ঘটনার। দুর্ঘটনার ১১ বছরের মাথায় ১৯৯৫ সালে দুর্গতদের চিকিৎসা সহায়তায় ও শিক্ষার বিস্তারে তৈরি হয়েছিল সম্ভাবনা ট্রাস্ট। গ্যাস দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে বিভিন্ন ধারার চিকিৎসা দেওয়া, বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ, রোগ সম্পর্কে সচেতনতার প্রচারের কাজ করে থাকে ওই ট্রাস্ট পরিচালিত সম্ভাবনা ক্লিনিক। কর্মীদের বেতন এবং ক্লিনিকের যাবতীয় খরচ মূলত চলত বিশ্বের ৪৫টি দেশ থেকে আসা অর্থ সাহায্যে।
ট্রাস্টের পরামর্শদাতা সতীনাথ ষড়ঙ্গী বলেন, ‘‘ক্লিনিকে ৫২ জন কর্মীর অনেকেই গ্যাস ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের। ক্লিনিক বন্ধ হওয়ায় কর্মহীন হয় অসংখ্য পরিবার। রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায়ের সূত্রে সরকারের থেকে সাহায্য নেয় না ট্রাস্ট। ফলে বিদেশের অনুদান জরুরি ছিল। সরকার ফের রেজিস্ট্রেশনের অনুমোদন দেওয়ায় বড় ক্ষতি আটকানো সম্ভব হল।’’