(বাঁ দিকে) আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল (ডান দিকে)। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের হয়ে মামলা লড়েছিলেন রাজ্য সরকারের আইনজীবী। কিন্তু কলকাতার পুলিশ কমিশনার (সিপি) বিনীত গোয়েলের অপসারণের আবেদনের মামলায় রাজ্যের কোনও আইনজীবীর দেখা নেই! এ নিয়ে বৃহস্পতিবার আবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ সিপির হয়ে এজলাসে উপস্থিত সরকারি আইনজীবীকে নোটিস গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছে।
সিপির অপসারণ চেয়ে হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি ছিল প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে। ওই মামলায় রাজ্যের আইনজীবী অনুপস্থিত ছিলেন বলে অভিযোগ। যা নিয়ে প্রধান বিচারপতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সেই সূত্রেই টেনে আনেন সন্দীপের মামলার প্রসঙ্গ। ওই মামলায় রাজ্যের আইনজীবীদের সন্দীপের হয়ে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছিল বলে জানান তিনি। পরে অবশ্য সন্দীপ ব্যক্তিগত আইনজীবী নিয়োগ করেছিলেন। এ নিয়ে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ আলাদা ভাবে মামলায় যুক্ত হয়েছিলেন। তার পরেও তাঁর হয়ে তিন দিন সরকারি আইনজীবীকে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে। পরে আবার আইনজীবী বদল হয়।
বিনীতের অপসারণ চেয়ে হাই কোর্টে যে মামলাটি হয়েছিল, তার নোটিস কোনও সরকারি আইনজীবী গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ। সন্দীপের মামলায় রাজ্যের আইনজীবীর সওয়ালের নেপথ্যে কোনও প্রভাব কাজ করেছিল কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছে আদালত। প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘শুনলাম আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁর জন্য রাজ্যের প্যানেল থেকে এক আইনজীবী সওয়াল করেছিলেন। অথচ এই মামলাটিতে রাজ্যের আইনজীবী কেউ নেই!’’ সিপির অপসারণ সংক্রান্ত মামলাটিতে হাই কোর্ট সিপির হয়ে এজলাসে উপস্থিত সরকারি আইনজীবীকে নোটিস গ্রহণ করতে বলেন। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
উল্লেখ্য, সরকারি আইনজীবীদের অনুপস্থিতি নিয়ে আগেও একটি মামলায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আদালত। সুন্দরবনে বাঘের হামলায় মৃত্যু সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতের নির্দেশের পরেও রাজ্যের আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না বলে অভিযোগ। সেই মামলায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ মন্তব্য করে, ‘‘রাজনৈতিক দিক থেকে স্পর্শকাতর নয়, এমন মামলাগুলিতে রাজ্যের আইনজীবী উপস্থিত থাকছেন না। এটা দুর্ভাগ্যজনক। আগে থেকে নির্দেশ সত্ত্বেও রাজ্যের কোনও আইনজীবী এই মামলায় আসেননি।’’ রাজ্য সরকারই বিভিন্ন মামলায় আইনজীবীদের নিয়োগ করে থাকে। এ ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আদালত।