কলকাতা হাই কোর্ট —ফাইল চিত্র।
নিয়োগ মামলায় এসএসসিকে ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাই কোর্ট। বুধবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ সব্বর রশিদির বিশেষ বেঞ্চের প্রশ্ন, ‘‘আর কত ভুল করবেন? ২০২৪ সালে এসেও ভুল করছেন!’’ বস্তুত, নতুন আরটিআই বা তথ্যের অধিকার আইনের ভিত্তিতে পাওয়া ওএমআর ঘিরে সরগরম ছিল এজলাস। নবম-দশমের এক চাকরিপ্রার্থীর আরটিআইয়ের প্রেক্ষিতে এসএসসি জানিয়েছে যে, তাদের ডেটাবেসে যে তথ্য আছে, সেখান থেকে তথ্য দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন ওঠে তা হলে এসএসসির কাছে ওএমআর কপি ছিল! বিচারপতি দেবাংশু বসাকের প্রশ্ন, ‘‘এটা তো কোথাও কোনও আদালতে এসএসসি বলেনি! এসএসসি জানিয়েছিল সমস্ত নথি এনওয়াইএসএ (বেসরকারি সংস্থা)-এর কাছে রয়েছে।’’
এ নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই এসএসসি ব্যাখ্যা দেয় যে আরটিআই-এর বয়ানে ভুল রয়েছে। তাদের আইনজীবী বলেন, ‘‘সিবিআই-এর কাছ থেকে আমরা যে, ওএমআর-এর ‘স্ক্যান্ড কপি’ পেয়েছিলাম। সেখান থেকেই এই চাকরিপ্রার্থীকে ওএমআর দেওয়া হয়েছে। আর নম্বর আমাদের ডেটাবেসে ছিল।’’ যার প্রেক্ষিতে আদালত প্রশ্ন করে আর কত ভুল করবে এসএসসি। অন্য দিকে, রাজ্যের হয়ে সওয়াল করার সময় আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, ২০০৭ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত ৭০টি মামলায় এসএসসির হয়ে নিয়োগে সম্মতি দিয়েছে আদালত। সেটাও ‘দুর্নীতি’ বলে মন্তব্য করে আইনজীবী বলেন, ‘‘এর সিবিআই তদন্ত হবে না?’’ এসএসসি মামলার এ দিনের শুনানিতে সিবিআই জানিয়েছে, গাজিয়াবাদ থেকে উদ্ধার হওয়া সামগ্রী হায়দরাবাদ সিএফএসএল-এ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে বলা হয়েছে এই মুহূর্তে ওই জিনিসপত্রের পরীক্ষা তারা করতে পারছে না। তাই সেগুলো আবার কলকাতার সিএফএসএল-এ নিয়ে আসা হবে। যার প্রেক্ষিতে আদালত নির্দেশ দেয়, আগামী ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সেগুলি আদালতে পেশ করতে হবে। পাশপাশি সিবিআইকে আদালত প্রশ্ন করে, তারা ডেটাবেস পরীক্ষা করেছে কি না। জবাবে হ্যাঁ বলে এসএসসি। তারা জানায় সেখানে ওএমআর ছিল না। তখন ‘বিতর্কিত চাকরিপ্রাপকদের’ আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র অভিযোগ করেন, ২০২১ সালে ওএমআর চেয়ে আরটিআই করেছিলেন ওই চাকরিপ্রার্থী। এখন হঠাৎ করে মামলা চলাকালীন কেন ওই নথি পেশ করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন করেন তিনি।
নিয়োগ মামলার তদন্তে সিবিআইয়ের তথ্যের উপর এসএসসি ‘বিশ্বাস’ রাখছে কি না, জানতে চায় আদালত। সকলের সওয়াল-জবাব শোনার পর আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে আদালত। উল্লেখ্য, বুধবারই বর্ধমানে প্রশাসনিক সভা থেকে শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে সরাসরি আদালতের উদ্দেশে আবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষক নিয়োগে অনেক শূন্যপদ পড়ে রয়েছে। কিন্তু কোর্টে আটকে রেখেছে।’’