কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম।
শারীরিকভাবে অক্ষম হলেও ভোট গ্রহণের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। এমন অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যের সরকারি শিক্ষকদের একাংশ। সোমবার কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়ে দিল, যাঁরা শারীরিক ভাবে অক্ষম, তাঁদের ভোটের পোলিং অফিসার হিসাবে ব্যবহার করতে পারবে না রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এ ব্যাপারে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জনস্বার্থ মামলা করেছিল রাজ্যের শিক্ষানুরাগী যৌথ মঞ্চ। সোমবার সেই মামলার শুনানি ছিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। বেঞ্চ কমিশনকে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়ে বলেছে, ‘‘এই ভোটের কাজে প্রতিবন্ধীদের পোলিং অফিসার হিসাবে নিয়োগ করা উচিত নয় কমিশনের।’’
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে বাকি আর পাঁচ দিন। এর মধ্যে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে এবং পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকার যুক্তিতে ভোটের দফা বৃদ্ধির আবেদন করেছে বিরোধীরা। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে হাই কোর্ট বড় কোনও বদলের নির্দেশ না দিলে ভোট হতে চলেছে আগামী শনিবার। অথচ এখনও পঞ্চায়েত ভোটের ভোট গ্রহণের দায়িত্বে থাকা পোলিং অফিসারদের নিয়েই দোলাচল কাটছে না। প্রশাসন সূত্রে খবর ছিল, পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজে সরকারি কর্মীর নাকি বেজায় অভাব। তাই, নির্বাচনের কাজে শারীরিক প্রতিবন্ধী সরকারি শিক্ষকদেরও ডাকা হয়েছে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তেও এ বার বাদ সাধল হাই কোর্ট।
পঞ্চায়েত ভোটের পোলিং অফিসার হওয়ার ডাক পাওয়া সরকারি শিক্ষকেরা অভিযোগ করেছিলেন, এর আগেও লোকসভা, বিধানসভা এবং পঞ্চায়েত ভোটে এই ভাবেই চিঠি পাঠানো হয়েছিল বিশেষ ভাবে সক্ষম সরকারি শিক্ষকদের। এ বারও তার পুনরাবৃত্তি হয়েছে। ৬০, ৭০ এমনকি ৮০ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষকদের পঞ্চায়েত ভোটে ডিউটি করার জন্য প্রশিক্ষণের চিঠি পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যার বিরুদ্ধে পাল্টা চিঠি দিয়ে স্থানীয় জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেই চিঠি মকুব হওয়া নিয়ে সংশয় ছিল। কারণ, এর আগে পঞ্চায়েত ভোটে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কথা জানিয়ে পোলিং অফিসারের কর্তব্য থেকে অব্যাহতি চেয়েও পাননি সরকারি শিক্ষকেরা। সোমবার অবশ্য আদালত সেই সমস্যার সমাধান করেছে।
যদিও আদালতের সিদ্ধান্তে নতুন করে শুরু হয়েছে জল্পনা। প্রশ্ন উঠেছে, পঞ্চায়েত ভোটের চার দিন আগে যদি শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সম্পন্ন পোলিং অফিসারদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়, তবে তাঁদের বদলি অফিসার আনতে গিয়ে কি সমস্যায় পড়বে না রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সেক্ষেত্রে প্রশাসন সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী যদি পোলিং অফিসারদের ঘাটতিই দেখা দিয়ে থাকে, তবে এর পর কি ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে না? সে প্রশ্নের জবাব অবশ্য সময়ই দেবে।