কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ। —ফাইল চিত্র।
পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার বিজেপি কর্মীর মৃত্যু মামলায় স্ত্রীর উপস্থিতিতে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। থানা এবং জেলের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতেও বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে গোটা ঘটনার রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে পুলিশের কাছ থেকে।
মঙ্গলবার কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ডেবরার সঞ্জয় বেরার (৪২)। তিনি জেল হেফাজতে ছিলেন। গত ৪ জুন, লোকসভা নির্বাচনের ফলঘোষণার দিন ডেবরার ভরতপুর অঞ্চলের পুরুষোত্তম নগর গ্রামে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। ওই ঘটনার পর দু’পক্ষের বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সঞ্জয়। তাঁর পরিবারের দাবি, পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার সময়ে সঞ্জয়ের দেহে কোথাও কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না। পরে সঞ্জয়কে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। কিছু দিনের মধ্যে পরিবার জানতে পারে, জেলে মাথা ফেটে গিয়েছে সঞ্জয়ের।
জেল থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রথমে পাঠানো হয়েছিল সঞ্জয়কে। সেখান থেকে কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে তাঁকে ভর্তি করানো হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানেই মঙ্গলবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কী ভাবে জেলে বসে মাথা ফাটল সঞ্জয়ের, প্রশ্ন তুলেছে পরিবার।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সঞ্জয় এলাকায় বিজেপি কর্মী হিসাবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর এই মৃত্যুর বিচার চেয়েছে বিজেপি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সমাজমাধ্যমে অভিযোগ করেছেন, বিজেপি করার কারণেই হেফাজতে থাকাকালীন পুলিশ তাঁকে মারধর করেছে। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে শুভেন্দু লেখেন, ‘‘মমতার পুলিশের বর্বরতায় হেফাজতে থাকাকালীন বিজেপি কর্মীর মৃত্যু।’’ সিবিআই তদন্ত বা বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
সঞ্জয়ের মৃত্যুর পর হাই কোর্টে মামলা করেন তাঁর স্ত্রী। কী ভাবে তিনি আঘাত পেলেন, জানতে চাওয়া হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহের নির্দেশ, সংশ্লিষ্ট থানার এসপিকে এই ঘটনার রিপোর্ট দিতে হবে। থানা এবং জেলের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে হবে। বিচারপতি জানান, মৃতের স্ত্রী এবং তাঁর কোনও প্রতিনিধির উপস্থিতিতে এসএসকেএমে দেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। হাসপাতালের অভিজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ময়নাতদন্ত হবে। গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিয়োগ্রাফিও করা হবে। ময়নাতদন্তের পর দেহ তুলে দিতে হবে পরিবারের হাতে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে গ্রেফতারির নথিও জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।