মানিক ভট্টাচার্যের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। ফাইল ছবি।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সোমবার তিনি হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে এই নির্দেশ দিয়েছেন। দেশে, বিদেশে মানিকের যত সম্পত্তি আছে, তা বাজেয়াপ্ত করতে হবে। জরিমানার অর্থ না মেটানো পর্যন্ত তাঁকে সম্পত্তি ফেরত দেওয়া হবে না।
মানিককে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। মামলাকারী শাহিলা পারভিনের অভিযোগ, জরিমানার টাকা মানিক এখনও দেননি। এই অভিযোগের পরেই মানিকের যাবতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিল উচ্চ আদালত। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) অথবা সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) মানিকের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে পারবে।
মামলাকারী শাহিলা ২০১৭ সালের টেট পরীক্ষার্থী। কিন্তু অভিযোগ, পরীক্ষা দিলেও ফলাফল তিনি জানতে পারেননি। পরীক্ষায় কত নম্বর পেয়েছেন তথ্য জানার অধিকার আইনে (আরটিআই) তা জানতে চান শাহিলা। নিজের ওএমআর শিটটিও দেখতে চান। মানিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, শাহিলাকে আসল ওএমআর শিট দেখানো হয়নি। এ ক্ষেত্রেও কারচুপি করা হয়েছে। যার ফলে চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন মামলাকারী।
এই মামলার শুনানির পর মানিককে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। মামলাকারীর আইনজীবী তীর্থঙ্কর দে জানান, মানিক প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন। আদালতের সেই নির্দেশের কথা তিনি জেল কর্তৃপক্ষকে জানান। কিন্তু জরিমানার টাকা মানিক দেননি। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আপিলও করেননি তিনি। তার পর সোমবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, যত দিন না মানিক জরিমানার টাকা মেটাচ্ছেন, তত দিন পর্যন্ত তাঁর সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাখবে তদন্তকারী সংস্থা।
এর আগে অন্য একটি মামলায় মানিককে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তবে সে ক্ষেত্রে মানিক সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। ডিভিশন বেঞ্চে শুনানির জন্য মামলা ওঠার সময় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে মানিকের আইনজীবী তাঁর দেওয়া নির্দেশ সংশোধন করার আর্জি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তখন জরিমানার অঙ্ক দ্বিগুণ করে দেন বিচারপতি। বলা হয়, ২ লক্ষ নয়, মানিককে দিতে হবে ৪ লক্ষ টাকা। অনুরূপ মামলায় মানিকের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে বললেন বিচারপতি।