কলকাতা হাই কোর্ট। — ফাইল চিত্র।
জিটিএ (গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন)-এর শিক্ষক নিয়োগ মামলায় সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট।
মঙ্গলবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু জানান, এই নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তাঁর কাছে এক সরকারি আধিকারিক চিঠি দিয়েছেন। তার ভিত্তিতেই প্রাথমিক অনুসন্ধান করে সিবিআই ২৫ এপ্রিল রিপোর্ট জমা দেবে। জিটিএ-কেও সে দিন একটি রিপোর্ট দিতে হবে। শিক্ষা দফতরের আধিকারিক বিষয়টি বিধাননগর (উত্তর) থানায় জানানো সত্ত্বেও কেন পুলিশ এফআইআর করেননি, এ দিন সেই প্রশ্নও তুলেছেন বিচারপতি। সংশ্লিষ্ট পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কেন পদক্ষেপ করা হবে না, তা-ও জানতে চান তিনি।
এ দিন কোর্টের পর্যবেক্ষণ, এক সরকারি আধিকারিকের লেখা ওই চিঠিতে যে তথ্য রয়েছে, তার অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গিয়ে থাকতে পারে। তাই সিবিআইকে তৎপরতার সঙ্গে অনুসন্ধান করতে হবে। এর পাশাপাশি জিটিএ-কে তাঁর নির্দেশ, আগামী শুনানিতে তাঁরা যে রিপোর্ট দেবে তাতে জানাতে হবে যে যত জনের বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে, তাঁরা কী ভাবে, কী প্রক্রিয়ায়, কার সুপারিশে চাকরি পেয়েছেন। তাঁদের যোগ্যতা কী আছে, তা-ও হলফনামার আকারে ওই রিপোর্টে জানাতে হবে জিটিএ-কে।
এক সরকারি আধিকারিক সরাসরি বিচারপতি বসুকে চিঠি পাঠিয়ে জিটিএ-র আওতাধীন এলাকায় বিভিন্ন স্কুলে বেআইনি ভাবে নিয়োগের কথা জানান। তার ভিত্তিতেই এই মামলা হয়। এই মামলায় কিছু চাকরিপ্রার্থীও যুক্ত। তাঁদের হয়ে কোর্টে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, শামিম আহমেদ। জানা গিয়েছে, শিক্ষা দফতরের এক পদস্থ কর্তা বিধাননগর পুলিশের কাছেও অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। যার পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন বিচারপতির মন্তব্য, “আমার মনে হয়, পুলিশ কাউকে আড়াল করার চেষ্টা করছে।”
এ দিন কোর্টে উপস্থিত ছিলেন বিধাননগর (উত্তর) থানার আইসি। তাঁকে উদ্দেশ করে বিচারপতি বলেন, “আপনার কাজ খুব একটা কঠিন ছিল না। কমিশনার অব স্কুল এডুকেশন আপনাকে এফআইআর করতে বলেছিলেন। আপনি যদি কাউকে আড়াল করতে চান, সেটা আপনার বিষয়। অভিযোগপত্র দেখেছেন? এখানে বিনয় তামাংয়ের নাম আছে। দেখেছেন? আপনি এফআইআর করলেন না কেন? আপনার বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপ কেন নেওয়া হবে না?” সূত্রের খবর, শুধু বিনয় নয়, ওই নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত হিসেবে আরও কয়েক জনের নামও উঠে এসেছে। যার মধ্যে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক শীর্ষ নেতাও আছেন বলে সূত্রের খবর।