স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ নিয়ে মামলা চলছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগে ঠিক কতটা দুর্নীতি হয়েছে, তা জানতে চারটি প্রশ্নের জবাব চাইলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশ, ওই চারটি প্রশ্নের জবাব রাজ্যের স্কুলে নিয়োগের দায়িত্বে থাকা স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং স্কুল শিক্ষার অন্যতম নিয়ামক সংস্থা মধ্য শিক্ষা পর্ষদকে দশ দিনের মধ্যে জানাতে হবে আদালতকে।
শুক্রবার স্কুলে গ্রুপ-ডি বা চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে সিবিআই বলে, ‘‘স্কুল নিয়োগে সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে।’’ কেন ‘সীমাহীন’ দুর্নীতি, তার ব্যাখ্যা দিয়ে সিবিআই জানায়, গ্ৰুপ-ডি কর্মী নিয়োগে যে ৪৪৮৭ শূন্যপদ ছিল, তার মধ্যে ২৮২৩টি পদেই নিয়োগ করা হয়েছে বেআইনি ভাবে। এমনকি, এই ২৮২৩ জনের উত্তরপত্র বা ওএমআরশিটেও কারচুপি করা হয়েছে। সিবিআইয়ের এই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মধ্য শিক্ষা পর্ষদের কাছে জবাব তলব করেন বিচারপতি। শুক্রবার মামলাটির শুনানিতে এসএসসি এবং পর্ষদকে মোট চারটি প্রশ্ন করেন তিনি।
বিচারপতি এসএসসির কাছে জানতে চান— ১) গ্ৰুপ-ডি পদে কত শূন্যপদ ছিল? ২) কত সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছে? ৩) কত ওএমআর শিটে কারচুপি করা হয়েছে? এর পাশাপাশি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছেও বিচারপতির প্রশ্ন— মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কত জনকে নিয়োগপত্র দিয়েছে? একই সঙ্গে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন এঁদের নাম, ঠিকানা, বাবার নাম-সহ বিশদ পরিচয় পর্ষদকে জানাতে হবে আদালতে। দুই সরকারি সংস্থাকেই, দশ দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে জবাব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
অন্য দিকে, সিবিআইয়ের মন্তব্যের ভিত্তিতে দুই সরকারি সংস্থাকে প্রশ্ন করলেও এই মামলার আর এক তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেননি। ইডির আইনজীবীর উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আপনাদের এখনই কোনও নির্দেশ দিচ্ছি না। প্রাথমিক মামলা ভাল করে তদন্ত করুন। দশ দিন পর আপনাদেরকে কোনও নির্দেশ দিতে পারি।’’ আগামী ৩১ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা।