স্কুল পড়ুয়াদের বিষয়ে কি আদৌ উদ্বিগ্ন সরকারি স্কুলের শিক্ষকেরা? প্রশ্ন বিচারপতি বসুর। ফাইল চিত্র ।
স্কুল পড়ুয়াদের বিষয়ে কি আদৌ উদ্বিগ্ন সরকারি স্কুলের শিক্ষকেরা? কতটাই বা উদ্বিগ্ন তাদের পড়াশোনা নিয়ে? সোমবার আদালতে প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। তাঁর পর্যবেক্ষণ, সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা সরকারের থেকে বেতন নিয়ে নিজেদের সন্তানদের বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করছেন। নিজেদের পছন্দ মতো স্কুলে বদলিও নিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু সরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে অতটা চিন্তা করা হচ্ছে না।
সরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের যদি তাদের পাঠ্যক্রম থেকে প্রশ্ন করা হয়, তা হলে তারা সঠিক উত্তর দিতে পারবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি বসু।
সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের উদ্দেশে বিচারপতি বসুর প্রশ্ন, ‘‘নিজেরা সরকারি স্কুলে চাকরি করছেন। সুবিধা মতো অন্য স্কুলে বদলি নিয়ে নিচ্ছেন। আর সরকারের দেওয়া বেতন নিয়ে নিজের সন্তানদের বেসরকারি স্কুলে পড়াচ্ছেন! অথচ সন্তানসম পড়ুয়াদের কথা চিন্তা করেছেন? ওই ছোট ছোট পড়ুয়াদের যদি জিজ্ঞাসা করি কী শিখেছে, সদুত্তর পাব তো? উত্তর আপনাদের জন্য স্বস্তিদায়ক হবে তো?’’
আসন্ন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা কমে যাওয়া নিয়েও সোমবার উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিচারপতি বসু। আর যদি পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা কমেই যায়, তা হলে অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা কোথায়, তা জানতে চেয়েও অসন্তোষের সুর শোনা গেল বিচারপতি বসুর গলায়। পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে শিক্ষক নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তুললেন তিনি। পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রীকে আইনে বদল আনার পরামর্শও দিলেন তিনি।
বিচারপতি বসুর মন্তব্য, ‘‘এ বার মাধ্যমিকে ৪ লক্ষ পরীক্ষার্থী কমে গেল। আর রাজ্য ১০ হাজার শিক্ষক প্রয়োজন বলে ঘোষণা করেছে। এই অতিরিক্ত শিক্ষকদের কী প্রয়োজন? অর্থের অপচয় ছাড়া কোনও লাভ হচ্ছে কি?’’
রাজ্যের শিক্ষা দফতরের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রীকে আইনে বদল আনতে বলুন। খুব কম পড়ুয়া রয়েছে এমন স্কুলের পড়ুয়াদের কাছের কোনও স্কুলে পাঠিয়ে দিন। আর যেখানে বেশি পড়ুয়া রয়েছে, শিক্ষকদের সেখানে বদলি করুন।’’
২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক। চলতি বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে ৬ লক্ষ ৯৮ হাজার ২৮ জন। যেখানে গত বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১০ লক্ষ ৯৮ হাজার ৭৭৫। কেন এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা প্রায় চার লক্ষ কমেছে, উঠছে সেই প্রশ্ন। যদিও পর্ষদের দাবি, অতিমারির প্রভাবেই এমনটা হয়েছে।