হাবড়ার তিনটি বুথে ভোটারের চেয়ে বেশি সংখ্যক ভোট পড়েছে বলে অভিযোগ। —ফাইল চিত্র।
বুথে ভোটারের সংখ্যা ১৪৮৮, কিন্তু ভোট পড়েছে প্রায় আড়াই হাজারের কাছাকাছি! একটি, দু’টি নয়, হাবড়ার তিন-তিনটি বুথে একই ছবি। অভিযোগ, ভোটারের চেয়েও বেশি সংখ্যক ভোট পড়েছে ওই বুথগুলিতে। অর্থাৎ, ভোটের পরিমাণ ১০০ শতাংশেরও বেশি! এই পরিসংখ্যান দেখে বুধবার বিস্ময় প্রকাশ করেছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ।
হাবড়া ২ ব্লকের তিনটি বুথে ১০০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনাচক্রে, এই ব্লকেই গণনার দিন ব্যালট পেপার খেয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল। ভুরকুণ্ডা গ্রামের ৩১ নম্বর বুথের তৃণমূল প্রার্থী মহাদেব মাটি কয়েকটি ব্যালট খেয়ে ফেলেন বলে অভিযোগ। পরে ওই বুথে ভোট বাতিল করে নির্বাচন কমিশন।
ভোটগণনায় গোলমালের কারণে হাবড়া ২ ব্লক আবার উঠে এল শিরোনামে। ভোটারের চেয়ে বেশি ভোট পড়ার অভিযোগ নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন জনৈক মহঃ নূরউদ্দিন-সহ কয়েক জন প্রার্থী। দেখা গিয়েছে, ওই ব্লকের দিঘরা মালিকবেরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮৩ নম্বর বুথে মোট ভোটারের সংখ্যা ১,৪৮৮। কিন্তু মোট ভোট পড়েছে ২,৪৯৬টি। এ ছাড়া, ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭১ নম্বর বুথে মোট ভোটারের সংখ্যা ১,৫২৯। কিন্তু মোট ভোট পড়েছে ১,৭৪০টি। একই ভাবে ৬৮ নম্বর বুথে মোট ভোটারের সংখ্যা ১,৪৮১। কিন্তু ভোট পড়েছে ২,১৭৭টি।
প্রতি ক্ষেত্রেই মোট ভোটের পরিমাণ ভোটারের সংখ্যার চেয়ে ১০০ শতাংশের অনেকটা বেশি। ভোটার না থাকলে এত ভোট দিলেন কারা? এই মামলায় বুধবার বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিচারপতি। তিনি হাবড়া ২ ব্লকের বিডিওর কাছে এ বিষয়ে রিপোর্ট তলব করেছেন। আগামী ৪ অগস্ট রিপোর্ট জমা দিতে হবে আদালতে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১০ অগস্ট।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের গণনায় কারচুপির অভিযোগ নতুন নয়। গত ১১ জুলাই গণনার দিন থেকেই রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে নানা ভাবে ভোট ‘লুটের’ অভিযোগ উঠেছে। কখনও শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে ভোটে জেতার অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। কখনও আবার বিরোধীদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছে শাসকদল। অনেক ক্ষেত্রেই ‘ভুয়ো’ ভোটারের অভিযোগ তোলা হয়েছে। হাবড়ার তিনটি বুথের পরিসংখ্যানে সেই ‘ভুয়ো’ ভোটারের ছাপই দেখা গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল, তার জবাব রিপোর্ট আকারে আদালতে জমা দিতে হবে সংশ্লিষ্ট বিডিওকে।