বিচারপতি অমৃতা সিংহ। —ফাইল চিত্র।
বেআইনি নির্মাণ ভাঙা নিয়ে আবার কলকাতা হাই কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়ল কলকাতা পুরসভা। মঙ্গলবার একটি মামলার শুনানিতে বিচারপতি প্রশ্ন তুললেন, ‘‘কয়েক সেকেন্ডে একটি বাড়ি ভেঙে পড়ে যাচ্ছে। অথচ একটি বাড়ির বাইরের অংশ ৩০ দিনেও ভাঙা গেল না!’’ কলকাতা পুরসভার কাছে বিচারপতি অমৃতা সিংহ জানতে চেয়েছেন, কিসের জন্য এত দিন দেরি হয়েছে বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কাজে।
গার্ডেনরিচে বাড়ি ভাঙার ঘটনার আবহেই বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত অন্য একটি মামলা উঠেছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহের বেঞ্চে। সেই মামলার শুনানিতেই অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি।
একবালপুরের একটি পাঁচ তলা ভবনের বেআইনি নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ তুলে মাস খানেক আগে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। মঙ্গলবার সেই মামলাটিই শুনানির জন্য ওঠে। বিচারপতিকে জানানো হয়, গত মাসে ওই মামলায় আদালত বাড়ির বাইরের অংশ ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু এক মাস পেরিয়ে গেলেও সেই নির্দেশ মানা হয়নি। এর পরেই মঙ্গলবার পুরসভার আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি সিংহের প্রশ্ন, ‘‘একটি বাড়ির বাইরের অংশ ভাঙতে ৩০ দিন সময় কি যথেষ্ট নয়? কেন নির্দেশ কার্যকর করা হল না?’’
এর জবাবে কলকাতা পুরসভার আইনজীবী আদালতকে জানান, যন্ত্রপাতি ব্যবহারের জন্য কিছু অসুবিধা ছিল বলেই ওই নির্মাণ ভাঙা যায়নি। কিন্তু বিচারপতি পাল্টা জানতে চান, বাড়ি ভাঙতে কী এমন যন্ত্র ব্যবহার করে কলকাতা পুরসভা? এর জবাব হলফনামা দিয়ে আদালতকে জানাতেও বলেন বিচারপতি সিংহ।
পুরসভার আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি বলেন , আদালতের নির্দেশ পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে কলকাতা পুরসভা। যন্ত্র ব্যবহারের যুক্তি দেখিয়ে নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি। এটা বাঞ্ছনীয় নয়। সম্প্রতি গার্ডেনরিচে বেআইনি ভাবে নির্মিত একটি বহুতল ভেঙে পড়েছে। সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে বিচারপতি বলেন, কয়েক সেকেন্ডে একটি বাড়ি ভেঙে যাচ্ছে, আর ৩০ দিনে বাড়ির বাইরের একটা বেআইনি অংশ ভাঙা গেল না? বাড়ি ভাঙতে কী যন্ত্র ব্যবহার করা হয়, আমি জানতে চাই। পুরসভার কমিশনার হলফনামা দিয়ে তা জানাবেন।"
আগামী ৯ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ওই দিন আদালতে কলকাতা পুরসভার পুর কমিশনারকে ওই মর্মে হলফনামা জমা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি।