পশুপতি পারস। —ফাইল চিত্র।
বিহারে আসনরফা চূড়ান্ত করে ফেলেছে বিজেপি। তবে কোনও আসন ছাড়া হয়নি রামবিলাস পাসোয়ানের ভাই পশুপতি পারসের রাষ্ট্রীয় লোক জনশক্তি পার্টি (আরএলএসপি)-কে। ‘ক্ষুব্ধ’ পারস পাল্টা চাল হিসাবে মঙ্গলবার সকালেই বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ ছাড়ার কথা ঘোষণা করলেন। একই সঙ্গে ইস্তফা দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকেও। একই সঙ্গে অভিযোগ করলেন যে, তাঁর সঙ্গে ‘অবিচার’ করেছে বিজেপি।
মঙ্গলবার সকালে পারস বলেন, “এনডিএ আসনরফার কথা জানিয়ে দিয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। আমার সঙ্গে এবং আমার দলের সঙ্গে অবিচার হল। তাই আমি মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিচ্ছি।” সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তা শুরু করে দিয়েছেন পারস। আলোচনা ফলপ্রসূ হলে কংগ্রেস এবং লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডির সমর্থনে হাজিপুর কেন্দ্র থেকেই ফের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন তিনি।
বিহারে এনডিএ-র রফাসূত্র অনুযায়ী, সে রাজ্যের ৪০টি আসনের মধ্যে বিজেপি ১৭ এবং জেডিইউ ১৬টিতে প্রার্থী দেবে। প্রয়াত রামবিলাস পাসোয়ানের পুত্র চিরাগ পাসোয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস) লড়বে পাঁচটি লোকসভা কেন্দ্রে। একটি করে আসন পাবে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঝিঁর হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা (হাম) এবং নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার সদস্য উপেন্দ্র কুশওয়াহার দল রাষ্ট্রীয় লোক মোর্চা (আরএলএম)।
২০১৯ সালে এনডিএ-র শরিক হিসাবে ছ’টি আসনে লড়ে সব ক’টিতেই জিতেছিল সাবেক লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি)। রামবিলাসের মৃত্যুর পর আড়াআড়ি দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় তাঁর দল এলজেপি। রামবিলাসের রাজনৈতিক উত্তরাধিকার নিয়ে চিরাগ এবং তাঁর কাকা পশুপতির মধ্যে মতবিরোধ দেখা যায়। ২০২০ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে এনডিএ ছাড়েন চিরাগ। কিন্তু নিজের দল রাষ্ট্রীয় লোক জনশক্তি পার্টি (আরজেএলপি)-কে নিয়ে এনডিএ-তে থেকে যান পশুপতি।
সম্প্রতি, চিরাগ আনুষ্ঠানিক ভাবে এনডিএ-তে ফেরেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ২০২১-এর মধ্যপর্বে এলজেপির ভাঙনের সময় বিজেপি দাঁড়িয়েছিল তাঁর কাকা পশুপতি পারসের পাশে। সে সময় পশুপতি-সহ লোকসভায় দলের পাঁচ সাংসদ এক দিকে ছিলেন। অন্য দিকে একা চিরাগ। সেই পরিস্থিতিতে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা পশুপতি গোষ্ঠীকেই ‘এলজেপি সংসদীয় দলের’ স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। এনডিএ জোটে পশুপতি গোষ্ঠীকে স্থান দিয়েছিল বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও চিরাগকে ব্রাত্য করে পশুপতিকে কেন্দ্র প্রতিমন্ত্রী করেছিলেন। কিন্তু সোমবার বিজেপির সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে রাষ্ট্রীয় লোক জনশক্তি পার্টির প্রধান পশুপতির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। বিজেপির একটি সূত্র মারফত জানা যায়, রামবিলাসের যে দলিত ভোটব্যাঙ্ক, তা চিরাগের সঙ্গেই রয়েছে, এমন ইঙ্গিত পেয়েই তাঁকে গুরুত্ব দেওয়া শুরু করে পদ্মশিবির। একদা রামবিলাসের কেন্দ্র হাজিপুরে কাকা-ভাইপোর ভোটযুদ্ধ হয় কি না, তা ভবিষ্যৎই বলবে।