কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র
পাশ করতে দরকার ৮৩। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ডিজিটাইজড ওএমআর শিটে তিনি ৬৮ পেয়েছেন। খাতায় কলমে ‘ফেল’ এক টেট পরীক্ষার্থীকে ‘পাশ’ করেছেন বলে ঘোষণা করল কলকাতা হাই কোর্ট।
বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে এই মামলা উঠেছিল। তিনি মামলার শুনানির পর প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে বিশেষ নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘‘ওই পরীক্ষার্থীর ইন্টারভিউ নিয়ে তাঁকে চাকরির পরীক্ষায় বসার সুযোগ করে দিতে হবে পর্ষদকে।’’ কেন এই নির্দেশ তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বিচারপতি।
ওই টেট পরীক্ষার্থীর নাম মহুয়া খাতুন। বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ায়। ২০১৬ সালে তিনি টেট পরীক্ষায় বসেছিলেন। সেই পরীক্ষার ফল যখন প্রথম জানানো হয়েছিল, তখন মহুয়া উত্তীর্ণ হয়েছেন বলেই জানিয়েছিল পর্ষদ। লিস্টে নামও ছিল তাঁর। কিন্তু পরে ওএমআর শিট নষ্ট করার অভিযোগ ওঠে। প্রাক্তন প্রাথমিক পর্ষদ সভাপতি তথা পলাশিপাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের অধীনেই ডিজিটাইজড ওএমআর শিট তৈরির কাজ শুরু করে পর্ষদ। এর পরে যখন মহুয়াকে ডিজিটাইজট ওএমআর শিটের নম্বর জানানো হয়, তখন তিনি দেখেন ৬৮ পেয়েছেন। অর্থাৎ টেটের নিয়ম অনুয়ায়ী, তিনি পাশ করেননি। মহুয়ার আইনজীবী অমিতাভ চৌধুরী আদালতের কাছে জানতে চান, এক বার পাশ করেছেন জানিয়ে দেওয়ার পর আবার নম্বর বদলে যাচ্ছে ডিজিটাইজড ওএমআর শিটে। এই নম্বর কেন মানবেন তাঁর মক্কেল?
মামলার শুনানিতে এর পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বোর্ড আগে জানিয়েছিল, পরীক্ষার্থী টেট উত্তীর্ণ। অথচ এখন বোর্ড বলছে সব মিলিয়ে তিনি ৬৮ নম্বর পেয়েছেন। ডিজিটাইজ ওএমআর শিটে কী করে নম্বর বদলাল? আসল ওএমআরশিট নষ্টের দায় প্রাথমিক পর্ষদের। ডিজিটাইজ ওএমআর শিটের তথ্যের যে ব্যাখা তারা দিয়েছে, তা-ও সন্দেহজনক।’’
এর পরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় পর্ষদকে নির্দেশ দেন, ‘‘বেনিফিট অফ ডাউটে প্রাথমিক বোর্ডের যুক্তি খারিজ হয়ে যাচ্ছে। বাদুড়িয়ার মহুয়া খাতুনকে ইন্টারভিউ নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়ার সুযোগ দিতে হবে পর্ষদকে।’’