—ফাইল চিত্র।
স্কুলের ফি নিয়ে টানাপড়েনের প্রথম রাউন্ডে কলকাতা হাইকোর্টে ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। ফি বৃদ্ধি এবং ফি মেটানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করা যাবে না বলে সরকার সোমবার একটি নির্দেশিকায় জানিয়ে দিয়েছিল। একটি জনস্বার্থ মামলায় হাইকোর্ট মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছে, বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ৩০ জুলাই পর্যন্ত বকেয়া ফি আগামী ১৫ অগস্টের মধ্যে মেটাতে হবে।
বিনীত রুইয়া নামে এক অভিভাবকের ওই মামলায় বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ১৫ অগস্টের মধ্যে কেউ যদি বকেয়া ফি পুরোপুরি দিতে না-ও পারে, ৮০ শতাংশ মেটাতেই হবে। আদালত সূত্রের খবর, মামলার আবেদনে বলা হয়, লকডাউনের সময় টিউশন ফি ছাড়াও স্কুলবাসের ভাড়া এবং কিছু ‘অপ্রয়োজনীয়’ ফি জমা দিতে বলা হচ্ছে। আদালত অবিলম্বে এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করুক।
রাজ্য সরকার ছাড়াও তিনটি কেন্দ্রীয় বোর্ড এবং দু’টি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের কর্তৃপক্ষকে মামলায় যুক্ত করা হয়। একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের কর্তৃপক্ষের আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী জানান, আবেদনকারীর তরফে ডিভিশন বেঞ্চে ১১২টি স্কুলের তালিকা দিয়ে বলা হয়, ওই সব স্কুলের অভিভাবকেরা ফি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন। সেই সঙ্গে অয়নবাবু জানান, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত এ দিন ডিভিশন বেঞ্চে বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে, ফি জমা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হোক।
সব পক্ষের বক্তব্য শুনে ডিভিশন বেঞ্চ মামলার সঙ্গে যুক্ত সকলকেই হলফনামা দিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে তাদের নির্দেশ: আবেদনকারীকে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে জানাতে হবে, তালিকাভুক্ত স্কুলগুলির মধ্যে কারও কোনও বক্তব্য থাকলে তারাও যেন তা হলফনামার আকারে পেশ করে। ১০ অগস্ট ফের শুনানি হবে।
ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন আরও নির্দেশ দিয়েছে, মামলার সঙ্গে যুক্ত সব স্কুলের কর্তৃপক্ষকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে, লকডাউনের সময় তাদের শিক্ষক, অশিক্ষক এবং অন্য কর্মীদের বেতন দেওয়া হয়েছে কি না। সেই সঙ্গে জানাতে হবে, লকডাউন পর্বের জন্য স্কুল ফি-র উপরে তারা কতটা ছাড় দিতে পারবে। ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ১৫ অগস্ট পর্যন্ত কোনও শ্রেণির কোনও পড়ুয়াকে অনলাইন ক্লাসে যোগ দেওয়া থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।
শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন স্বাক্ষরিত সোমবারের নির্দেশিকায় জানানো হয়েছিল, এই করোনা-কালে টিউশন ফি বা অন্য কোনও ফি বাড়ানো যাবে না। কোনও পড়ুয়া ফি মেটাতে না-পারলে কোনও ভাবেই চাপ সৃষ্টি করা যাবে না। পড়ুয়ারা এখন স্কুলে ক্লাস করছে না। তাই এই সময়ে পরিবহণ, গ্রন্থাগার, কম্পিউটার, ল্যাবরেটরি, খেলাধুলা এবং অন্যান্য ‘অ্যাক্টিভিটি’ বাবদ যেন কোনও ফি নেওয়া না-হয়। এই পরিস্থিতিতে ফি মেটাতে না-পারলে অনলাইন ক্লাসে কোনও পড়ুয়াকে আটকানো যাবে না।