ফাইল চিত্র।
স্কুলে গ্ৰুপ-সি ও গ্ৰু-ডি কর্মীর পর এ বার শিক্ষক নিয়োগও বাতিল করল কলকাতা হাই কোর্ট। বেআইনি ভাবে নিয়োগ করায় মুর্শিদাবাদের ৬ শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশ, ওই ৬ জনের চাকরি বাতিল করবেন মুর্শিদাবাদ জেলা স্কুল পরিদর্শক। এমনকি, তাঁদের বেতনের টাকা উদ্ধারের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
নবম ও দশম শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগের জন্য পরীক্ষা নিয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। ওই পরীক্ষায় ৬৬.৬৭ নম্বর পান মহম্মদ আব্দুল গনি আনসারি। তাঁর দাবি, কম নম্বর থাকা সত্ত্বেও ওই ৬ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। অথচ বেশি নম্বর পেয়েও তিনি চাকরি পাননি। সেই প্রেক্ষিতেই উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন আব্দুল। গত বছর নভেম্বরে ওই মামলার শুনানিতে মামলাকারীর দাবিতে সত্যতা রয়েছে বলে জানায় এসএসসি। তারা স্বীকার করে, অনিচ্ছাকৃত ভাবে ওই নিয়োগে ভুল হয়েছিল। যদিও আদালত তা মানতে রাজি হয়নি। বিচারপতির গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, কোনও ভুল নয়। জেনেবুঝে ওই নিয়োগ করা হয়েছিল।
সেই কারণেই তাঁর নির্দেশ, জেলা স্কুল পরিদর্শককে ওই ৬ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিল করতে হবে। এ ছাড়া এত দিন ধরে তাঁরা যা বেতন পেয়েছেন তা-ও উদ্ধার করতে হবে। ওই শিক্ষকেরা বেতনের টাকা দিতে অস্বীকার করলে আইনি সাহায্যের কথাও স্পষ্ট করে জানিয়েছে আদালত। নির্দেশে বিচারপতি জানান, সরকারি অর্থে তাঁরা যে বেতন পেয়েছেন তা ফেরত না দিলে, তাঁদের বিরুদ্ধে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে পারেন স্কুল পরিদর্শক। একই সঙ্গে সোমবার বিচারপতির নির্দেশ, কোন প্রক্রিয়া মেনে, কী ভাবে ওই শিক্ষকদের নিয়োগ করা হয়েছিল ৭ দিনের মধ্যে তা রিপোর্ট আকারে দিতে হবে আদালতে। এই রায় নিয়ে মামলকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, ‘‘নিয়ম মেনে মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়নি। তার ফলেই বেআইনি ভাবে ওই শিক্ষকদের নিয়োগ করা হয়েছে। আগামী শুনানিতে সেই নিয়োগ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইবে আদালত।’’
প্রসঙ্গত, এর আগে স্কুলে গ্ৰুপ-সি ও গ্ৰুপ-ডি নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে প্রায় ৮০০ জনের বেশি কর্মীর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এমনকি তাঁদের বেতন বন্ধ এবং তা উদ্ধার এবং ওই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল একক বেঞ্চ। যা চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। ডিভিশন বেঞ্চ ওই নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে। এখন সেখানেই মামলাগুলি বিচারাধীন রয়েছে।