মনোরঞ্জন পাত্র। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূল নেতা খুনের মামলায় সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক মনোরঞ্জন পাত্রকে জামিন দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিধাননগর এমপি-এমএলএ আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাঁকুড়ায় তালড্যাংরার তিন বারের বিধায়ক। বৃহস্পতিবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, আপাতত জামিনে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে মনোরঞ্জনকে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে যে সাজা ঘোষণা হয়েছিল, তাতে এখনই হস্তক্ষেপ করতে ইচ্ছুক নন বিচারপতিরা। পরে সেই বিষয়ে শুনানি হবে বলে জানিয়েছে আদালত।
২০১০ সালের ২৯ জুন বিকেল ৫টা নাগাদ বাঁকুড়ায় তালড্যাংরায় এক তৃণমূল কর্মীকে খুনের অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় মনোরঞ্জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০২২ সালে ওই মামলায় মনোরঞ্জনকে দোষী সাব্যস্ত করে বিধাননগরের সাংসদ ও বিধায়কদের জন্য নির্দিষ্ট আদালত। নিম্ন আদালতের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে গিয়েছিলেন সিপিএম নেতা। তাঁর হয়ে মামলা লড়েছেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং উদয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়।
সেই মামলায় হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, বিধানসভার সহকারী সচিব জানিয়েছেন, ঘটনার দিন বেলা ১১টায় মনোরঞ্জন বিধানসভায় উপস্থিত ছিলেন। ফলে বিকেল নাগাদ ঘটনাস্থলে তাঁর উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যদিও এই মামলার সাক্ষী তাঁর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলেছেন। তাই এই অবস্থায় মনোরঞ্জনকে জামিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদালত। এর আগে বিচারপ্রক্রিয়া চলার সময়েও এক বার জামিন পেয়েছিলেন সিপিএম নেতা।
মনোরঞ্জন বর্তমানে সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, পশ্চিমবঙ্গ ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি। ২০১০ সালের ২৯ জুন গুলিতে খুন হন তৃণমূল কর্মী ইয়াজুল রহমান খান ওরফে মদন খান। তাঁর খুনে নাম জড়িয়েছিল মনোরঞ্জনের। শুক্রবার হাই কোর্ট তাঁকে জামিন দেওয়ায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী তথা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্র বলেন, ‘‘আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, খুনের অভিযোগ মিথ্যা। বলা হয়েছিল, মনোরঞ্জন দাঁড়িয়ে থেকে খুনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যে সময়ে ঘটনা ঘটেছিল, বিধানসভা অধিবেশন শেষে তাঁর পক্ষে কখনওই বাঁকুড়ার রাজপুরে পৌঁছনো সম্ভব ছিল না। কোর্টে সেটাই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’’