মঙ্গলবার সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন তন্ময় ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।
এক মহিলা সাংবাদিককে হেনস্থার মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে আগাম জামিনের আর্জি জানিয়েছিলেন সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য। হাই কোর্ট সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে। মঙ্গলবার তন্ময় জানিয়েছেন, আইনি কাগজপত্র তাঁর আইনজীবীর কাছে রয়েছে। বুধবার তিনি সে সব হাতে পাবেন।
তন্ময়ের বিরুদ্ধে এক মহিলা সাংবাদিক বরাহনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশে এফআইআর করার পর একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়। তার মধ্যে জামিন অযোগ্য ধারাও রয়েছে প্রাক্তন সিপিএম বিধায়কের বিরুদ্ধে। সেই কারণে হাই কোর্ট থেকে আগাম জামিন নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তন্ময়-ঘনিষ্ঠেরা। উল্লেখ্য, গত ২৭ অক্টোবর ফেসবুকে লাইভ করে তন্ময়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ওই সাংবাদিক। তার পর বরাহনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর মধ্যে তন্ময়কে বার চারেক ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিলেন বরাহনগর থানার তদন্তকারী অফিসারেরা। নভেম্বরের শেষে তন্ময় এ-ও দাবি করেছিলেন, তাঁকে পুলিশের তরফে কাগজপত্র দিয়ে বলা হয়েছে, আর তাঁকে ডাকা হবে না। এ সবের পরেও কেন তন্ময়কে এত দিন পরে আগাম জামিনের আর্জি জানাতে হল, তা নিয়ে দলের অন্দরেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তন্ময় বলেছেন, ‘‘যা জানেন, আইনজীবীই জানেন।’’
সিপিএম নেতা তন্ময়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার গোড়া থেকেই তাঁকে পরামর্শ দিচ্ছেন আইনজীবী তথা রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশ ভট্টাচার্য। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের জন্য তিনি আপাতত দিল্লিতে রয়েছেন। বিকাশের বক্তব্য, বুঝেশুনেই দেরি করে আগাম জামিনের আবেদন জানানো হয়েছিল।
ওই মহিলা সাংবাদিক সমাজমাধ্যমে অভিযোগ করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তন্ময়কে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করেছিল সিপিএম। তা ঘোষণা করেছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। দলের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরে গত সপ্তাহেই তন্ময়ের সাসপেনশন প্রত্যাহার করে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। তার পর মঙ্গলবার সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন তন্ময়। তবে বারাসতে সিপিএমের জেলা দফতরের সেই বৈঠকে বেশি ক্ষণ ছিলেন না তিনি। তাঁর এক নিকট জনের মৃত্যুর কারণে তিনি দলীয় বৈঠক থেকে মৃতের শেষকৃত্যে যোগ দেন। সিপিএম সূত্রে খবর, মঙ্গলবারের বৈঠকে তন্ময় বিশেষ কিছু বলেনওনি। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর তরফে জেলার অন্যতম দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সুজন চক্রবর্তী। দলের অভ্যন্তরীণ কমিটি তন্ময়ের বিষয়ে তদন্ত করে যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে, তা নিয়ে বুধবার রাজ্য সম্পাদকণ্ডলীর বৈঠকে আলোচনা হতে পারে।