Suvendu Adhikari

শুভেন্দুর ভাড়াবাড়ি বলে জানতামই না: পুলিশ ।। ১০ জুন পর্যন্ত কোলাঘাটের বাড়িতে তল্লাশি নয়: কোর্ট

শুভেন্দুর দায়ের করা ওই মামলায় কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়েছে, বিরোধী দলনেতার কোলাঘাটের অফিস বা বাড়িতে আপাতত ১০ জুন পর্যন্ত পুলিশি তল্লাশি করা যাবে না।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৪ ১৬:০৪
Share:

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র ।

গত মঙ্গলবার শুভেন্দু অধিকারীর কোলাঘাটের ভাড়াবাড়িতে হানা দিয়েছিল পুলিশ। তার পরেই পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। তবে শনিবার সেই মামলার শুনানি চলাকালীন রাজ্য আদালতে জানিয়েছে, ওই বাড়িটি যে শুভেন্দু থাকেন বা তাঁর নামে ভাড়া দেওয়া, তা জানত না পুলিশ। যে অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল, সেই মামলায় শুভেন্দু অভিযুক্ত বা সাক্ষী নন বলেও আদালতে জানিয়েছে রাজ্য। অন্য দিকে শুভেন্দুর দাবি, কোনও তল্লাশি পরোয়ানা না থাকা সত্ত্বেও উক্ত দিনে তাঁর ভাড়াবাড়িতে অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ।

Advertisement

শুভেন্দুর দায়ের করা ওই মামলায় কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়েছে, বিরোধী দলনেতার কোলাঘাটের অফিস বা বাড়িতে আপাতত ১০ জুন পর্যন্ত পুলিশি তল্লাশি করা যাবে না। তবে বিরোধী দলনেতার কোলাঘাটের ভাড়াবাড়িতে পুলিশি তল্লাশির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়ে বিচারপতি অমৃতা সিনহা এ-ও জানিয়েছেন, এই সময়ের মধ্যে জরুরি কোনও নির্দেশের প্রয়োজন হলে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবে রাজ্য।

মঙ্গলবার বিকেলে শুভেন্দুর পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের বাড়িতে যায় পুলিশ। অভিযোগ, প্রায় ৭০-৮০ জন পুলিশকর্মী ওই বাড়ি ঘিরে তল্লাশি করেন। পুলিশের তরফে দাবি করা হয়, এক দুষ্কৃতীর খোঁজে তারা সেখানে গিয়েছিল। অন্য দিকে, এই পুলিশি অভিযানের খবর পেয়ে স্থানীয় বিজেপি নেতা-কর্মীরা সেখানে ছুটে যান। পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু হয়ে যায়। খবর পেয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে কোলাঘাট থানায় চলে যান নন্দীগ্রামের বিধায়ক। শুভেন্দুর দাবি, তাঁর কাছে হাই কোর্টের রক্ষাকবচ রয়েছে। পুলিশ কোনও দমনমূলক পদক্ষেপ করতে পারবে না। আর পুলিশের কাছে যদি ‘সার্চ ওয়ারেন্ট’ থেকে থাকে, তা হলে তাঁর উপস্থিতিতেই তল্লাশি চালাতে পারত পুলিশ। এর পরেই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন বিরোধী দলনেতা। শুক্রবার সেই মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সিন্‌হার এজলাসে।

Advertisement

শুনানি চলাকালীন শুভেন্দুর আইনজীবী আদালতে জানান, পুলিশের কাছে কোনও তল্লাশি পরোয়ানা না থাকা সত্ত্বেও মঙ্গলবার বিরোধী দলনেতার অফিস এবং ভাড়াবাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল পুলিশ। নির্বাচনের সময় শুভেন্দুকে উত্ত্যক্ত করার জন্য পুলিশ ওখানে অভিযান চালিয়েছিল বলেও শুভেন্দুর আইনজীবীর দাবি। যদিও রাজ্যের দাবি, পুলিশের কোনও ধারণা ছিল না যে, কোলাঘাটের ওই বাড়ি শুভেন্দুর নামে ভাড়া নেওয়া। পুলিশের কাছে থাকা নথি অনুযায়ী, ওই বাড়ির মালিক সুরজিৎ দাস নামে এক ব্যক্তি। পাশাপাশি আদালতে রাজ্য জানিয়েছে, বিকাল ৫টা নাগাদ পুলিশ অভিযোগ পায় যে, ওই বাড়িতে প্রচুর পরিমাণ অস্ত্র লুকোনো রয়েছে। এর পরেই তল্লাশি অভিযানে নামে পুলিশ। ফ্লাইং স্কোয়াডকে খবর দেওয়া হয়। সাড়ে ছ’টা নাগাদ তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। ওই মামলায় শুভেন্দু অভিযুক্ত বা সাক্ষী নন বলেও আদালতে রাজ্য জানিয়েছে। যদিও শুভেন্দুর আইনজীবীর দাবি, ওই দিন ওই বাড়িতে কোনও ফ্লাইং স্কোয়াড আসেনি।

দু’পক্ষের যুক্তি শোনার পর বিচারপতি সিন্‌হা রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘একটা অভিযোগ পেয়েই পুলিশ চলে গেল? অনুসন্ধান করল না? এ রকম তল্লাশি অভিযানের ক’টা উদাহরণ রয়েছে?’’ এর পরেই কোলাঘাটে শুভেন্দুর অফিস এবং ভাড়াবাড়িতে পুলিশি তল্লাশি উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি। বিচারপতি সিন্‌হার নির্দেশ, আগামী ১০ জুন পর্যন্ত শুভেন্দুর ওই অফিস বা ভাড়াবাড়িতে তল্লাশি চালাতে পারবে না পুলিশ। তবে তিনি জানিয়েছেন, এই সময়ের মধ্যে যদি কোনও গুরুত্বপূর্ণ নথি পুলিশের হাতে আসে এবং তদন্তের প্রয়োজন হয়, তা হলে আবার আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement