কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য শিক্ষাবন্ধুদের ১ দিন অতিরিক্ত সময় দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, শুক্রবার মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন শিক্ষাবন্ধুরা। অন্যদিকে, আদালতের নির্দেশের পরও ‘বাধার’ কারণে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন বাম, আইএসএফ, বিজেপি প্রার্থীরা। বৃহস্পতিবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে এই নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তাঁরা। শুক্রবার বিচারপতি মান্থার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি।
শিক্ষাবন্ধুদের মনোনয়নের জন্য অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়েছে। এ বার কি ‘আক্রান্ত’ বিরোধী প্রার্থীদের ক্ষেত্রেও মনোনয়নের জন্য বাড়তি সময় দেওয়া হবে? আইনজীবীদের একাংশের মতে, শিক্ষাবন্ধুদের মামলায় মনোনয়নে অতিরিক্ত সময় দেওয়ার দরজা খুলে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। ফলে ‘আক্রান্ত’ বিরোধী প্রার্থীদের ক্ষেত্রেও মনোনয়নের জন্য অতিরিক্ত সময় দিতে পারে আদালত। যদিও শেষমেশ আদালত কী নির্দেশ দেয়, তা শুক্রবারই স্পষ্ট হবে।
আগামী ৮ জুলাই পঞ্চায়েত নির্বাচন। অশান্তির আবহে বৃহস্পতিবার মনোনয়ন-পর্ব শেষ হয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটে পার্শ্বশিক্ষকেরা অংশ নিতে পারলে শিক্ষাবন্ধুরা নয় কেন? এই প্রশ্ন তুলে বুধবার হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শিক্ষাবন্ধু কর্মীরা। এই বিষয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চান বিচারপতি অমৃতা সিন্হা। তার পরেই বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায় যে, শিক্ষাবন্ধুরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির এজলাসে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন শিক্ষাবন্ধুরা। তাঁদের তরফে দাবি করা হয় যে, কমিশন বুধবার যে সময় বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল, তত ক্ষণে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় (সকাল ১১টা থেকে ৩টে পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়) শেষ হয়ে গিয়েছিল। তাই মনোনয়নের জন্য অতিরিক্ত সময় দেওয়া হোক। বৃহস্পতিবার এই মামলায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, শুক্রবার শিক্ষাবন্ধুরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন।
ভাঙড়, সন্দেশখালি, মিনাখাঁ-সহ বিভিন্ন এলাকায় বিরোধীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে— এই অভিযোগ জানিয়ে হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ওই প্রার্থীরা। সেই মামলায় বৃহস্পতিবার বিচারপতি মান্থা নির্দেশ দেন, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য বিরোধী শিবিরের প্রার্থীদের একটি জায়গায় জড়ো হতে হবে। সেখান থেকে তাঁদের পাহারা (এসকর্ট) দিয়ে মনোনয়ন কেন্দ্র পর্যন্ত নিয়ে যাবেন থানার ওসি। মনোনয়ন জমা দিতে না পেরে পঞ্চায়েতের ৪ প্রার্থী হাই কোর্টে মামলা করতে গিয়েছিলেন। হাই কোর্টের নির্দেশ, ওই প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে নিয়ে যাবে কলকাতার হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ। হেয়ার স্ট্রিট থানাকে সাহায্য করবে সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশ। এই নির্দেশের পরও পুলিশি পাহারায় মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে বাধা পান বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধী প্রার্থীদের একাংশ। এর পরেই আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তাঁরা। আইএসএফ-এর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশে প্রার্থীদের পুলিশ এসকর্ট করে নিয়ে গেলেও অনেকে মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। পুলিশের উপস্থিতিতেই বাধা দেওয়া হয়েছে। হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আমরা এই ঘটনার ভিডিয়ো দেখিয়েছি। শুক্রবার মামলার শুনানি রয়েছে। মনোনয়নের জন্য বাড়তি সময় চাইব।’’